1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌সহজ টার্গেট মেয়েরাই!‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আবার প্রমাণ হলো, রাজনৈতিক বিরুদ্ধাচারে অপপ্রচার এবং নোংরামির সহজতম শিকার হন মহিলারাই৷ সে দিল্লির জেএনইউ হোক, বা কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়৷

https://p.dw.com/p/3QKsd
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র উচিত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া৷ শুধু এই কথা বলেই বিজেপির আইটি বাহিনীর আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী, বর্ষীয়ান ঊর্মিমালা বসু৷ তাঁকে নিয়ে তৈরি অশ্লীল মিম ঘুরছে সোশাল মিডিয়ায়৷ তাঁর এই অসম্মানে যেমন বহু বাঙালি ক্ষুব্ধ, তেমন অনেকে সমর্থন করেছেন এই অপচেষ্টা৷ তার মধ্যে একজন বাবুল সুপ্রিয় নিজে, যিনি রাজনৈতিক নেতাসুলভ চাল দিয়ে আপত্তিকর ওই মিমটি নিজের ফেসবুকের পাতায় শেয়ার করে লিখেছেন, এই ধরনের খারাপ কাজের তিনি নিন্দা করছেন!‌

ঊর্মিমালা বসু নিজে সঙ্গত কারণেই ক্ষুব্ধ এই অসভ্যতায়৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি সরাসরি বললেন, ৭৩ বছর বয়সে এটা কি আমার প্রাপ্য?‌ যদিও তিনি বিষয়টা নিয়ে আর আলোচনা করতেও চাইছেন না৷ সোশাল মিডিয়ায় কুৎসার জবাব তিনি সেখানেই দিয়েছেন৷ নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‌‘‌আমাকে নিয়ে যাদের নোংরা কথা বলতে আটকায় না, তাদের সামনে ছাত্র-ছাত্রীরা আরো বেশি বিপন্ন, আমার কাছে সেটাই দুশ্চিন্তার৷ ছোটদের, যারা আমার নাতিনাতনির বয়সি তাদের সাবধানে থাকতে বলি৷’’

৭৩ বছর বয়সে এটা কি আমার প্রাপ্য?‌: ঊর্মিমালা বসু

ঘটনা হলো, ঠিক সেটাই ঘটছে৷ বিশেষ করে আক্রমণের লক্ষ্য হচ্ছেন মেয়েরা৷ তাঁদের নামে নোংরা অভিযোগ তোলা হচ্ছে৷ সোশাল মিডিয়ায় পরিকল্পিত চরিত্র হননের পাশাপাশি প্রকাশ্য হেনস্থাও করা হচ্ছে তাঁদের৷ যাদবপুরে যেদিন বাবুল সুপ্রিয়র রাস্তা আটকানো হয়, সেদিনই ওই অঞ্চলে কয়েকজন ছাত্রীকে কান ধরে ক্ষমা চাইতে বলা, বা তাদের ঘিরে ধরে গালিগালাজের ঘটনা ঘটেছে৷

আর বিরোধিতায় যুক্ত ছাত্রীদের ‘‌খারাপ’ প্রমাণ করার চেষ্টার একটা নির্দিষ্ট নকশাও‌ আছে৷ জেএনইউর ছাত্র সংসদ দখল করতে না পারলে, ক্যাম্পাসে রোজ কত মদের বোতল, নেশার ওষুধের ছেঁড়া ফয়েল, সিরিঞ্জ আর ব্যবহৃত কন্ডম পাওয়া যায়, আবর্জনা ঘেঁটে তার হিসেব কষতে বসেন নেতারা৷ আর যাদবপুর যদি কোনো নেতার রাস্তা আটকায়, তাহলে সেখানে মদ-গাঁজার চলন কেমন, ছেলে-মেয়েরা কতটা ‘‌বদচলন’, তার প্রমাণ দিতে পুরনো ছবি, ভিডিও খুঁজে বের করে ছড়ানো হয়৷ সব দলই বেকায়দায় পড়লে সেই চেষ্টা করে৷ শাসকদলের এক তরুণ তুর্কি নেতার যাদবপুর নিয়ে রসালো মন্তব্য, মিছিলের স্লোগান মাত্র কয়েক বছর আগের ঘটনা! এবং সব ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রমহীনভাবে লক্ষ্য হন মেয়েরা৷

আন্দোলনের সময়ও তাঁদের শারীরিক আক্রমণের শিকার হতে হয়৷ জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের ছাত্রী স্বাগতমা কর৷ তিনি মনে করিয়ে দিলেন, প্রথমে ছাত্রীদের শারীরিকভাবে বাধা দেওয়া এবং তারপর রাজ্যের বিজেপি সভাপতির কটাক্ষ যে, ওখানকার মেয়েরা কোনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কি না, আমরা জানি না!‌