1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়ে ভাবমূর্তি উদ্ধার!

২১ এপ্রিল ২০২১

জনাব তালুকদার আবদুল খালেক আপনাকে অভিনন্দন৷ সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সীর বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে জেল হাজতে পুরে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আপনার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ও সুনাম আপনি উদ্ধার করতে পেরেছেন৷

https://p.dw.com/p/3sJSe
Symbolbild Gefangene der Liebe gefangen Band Verbindung
ছবি: Fotolia/axentevlad

এনটিভির খুলনা ব্যুরো প্রধান আবু তৈয়ব ফেসবুকে লেখালেখি করছিলেন আপনাকে নিয়ে, বলছিলেন মংলা কাস্টমসে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার কথা৷ আপনি মানী লোক, তাতে আপনার মান ইজ্জত আর থাকছিল না৷ আপনার ভাবমূর্তি ভেঙে পড়ছিল ভঙুর কাঁচ অথবা মুড়ি মুড়কির মতো৷

আপনার মতো মানী লোকের মান বাঁচাতেই তো সরকার কী দারুণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে৷ আর কেউ নিশ্চয়ই শুল্ক ফাঁকি বা ভোটের হিসাব গোলমাল নিয়ে কথা বলবেন না ফেসবুকে৷ সফেদ পাঞ্জাবিতে ধোয়া তুলসি পাতা হেন পবিত্র আপনারা, আপনাদের গায়ে দাগ লাগানো অবশ্যই ফৌজদারি অপরাধ৷

অবশ্য একটা বিষয় কী জানেন? আপনার যে ওই স্ট্যাটাসে বা ফেসবুকের তৎপরতায় মান গেছে, তা আমরা বুঝতে পারিনি৷ বুঝেছেন আপনি৷ তাই আমাদের কৌতূহল ঠিক কোন সময় বা কোন অবস্থায় আপনি বুঝতে পারলেন যে, আপনার সম্মানের হানি হচ্ছে? মানে, বিষয়টা খালি চোখে দেখা যায় না বলেই বুঝতে চেষ্টা করছি৷ নাকি কাউকে আপনি বলতে শুনলেন, এই দ্যাখ দ্যাখ, জনাব মুন্সীর লিখায় জনাব খালেকের ভাবমূর্তি ভেঙে গেল৷

আমাদের সাংবাদিকদের আপনি কী বার্তা দিলেন জনাব মেয়র, তা-ও একটু পরিষ্কার করবেন৷ আপনার বিরুদ্ধে লেখা যাবে না, এটাই কি? সত্য মিথ্যার কথায় বলা যায়, এই ডিজিটাল যুগে মিথ্যা সংবাদের প্রচার বাড়লেও প্রসার বাড়েনি৷ আলতো এক টিপেই সত্য আর মিথ্যা আলাদা করা যায়৷ তার জন্য পাইক বরকন্দাজ আর আলো ঝলমলে ডিজিটাল আইন সাধারণত লাগে না৷

আর ভাবমূর্তি বিষয়টাও দারুণ, যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদেরই তা থাকে৷ অন্যদের সম্পর্কে আপনি সত্য-মিথ্যা যা-ই বলেন, তাতে তাদের মান যায় না৷

সদাশয় সরকারকেও অভিনন্দন চমৎকার এই আইনটির জন্য৷ আপনাদের তুমুল জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধিদের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য এর চেয়ে বড় অস্ত্র তো আর হতে পারতো না৷

DW Bengali Teamleiter - Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/A. Islam

আপনারা অবশ্য মুখে বলেন, সাংবাদিকদের হয়রানি করার জন্য এই আইন নয়, বরং সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল হয়রানি বন্ধ করার জন্যই এই আইন৷ আর এই আইন অবশ্যই বাক-স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক নয়৷

কিন্তু এসব কথা নিশ্চয়ই আপনাদের কৌশল এবং তা এর মধ্যেই দারুণ কার্যকর বলে বিবেচিত৷ সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল হয়রানির জন্য লেখক মুশতাক মরে গেল, কার্টুনিস্ট কিশোর কারাগারে থাকলো এক বছর৷ আর খুলনার মেয়রসহ সংসদ সদস্য, মন্ত্রী আর প্রধানমন্ত্রী এইসব সাধারণ মানুষ হয়রানি বা ভাবমূর্তি হারানো থেকে মুক্ত থাকতে পারলেন৷

আপনারা নিশ্চয়ই আরো অভিনন্দন পাচ্ছেন, আকাশে বাতাসে শুনছেন জয়ধ্বনি!

Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত।
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য