1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাম্প্রদায়িক হামলা রোধে ডিমেরিট পয়েন্ট চালু করা যেতে পারে

হাবিব ইমরান
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

কয়েক বছর আগে কোনো একটি শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিকের প্রথম পাতায় ভোটের খবরের একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় খুব আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে গিয়েছে৷ ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/4NJgF
মন্দিরে হামলা ও দুজন হিন্দুকে হত্যার প্রতিবাদে ২০২১ সালের অক্টোবরে ঢাকায় প্রতিবাদ হয়৷
মন্দিরে হামলা ও দুজন হিন্দুকে হত্যার প্রতিবাদে ২০২১ সালের অক্টোবরে ঢাকায় প্রতিবাদ হয়৷ছবি: Mahmud Hossain Opu/AP/picture alliance

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রায় সব বিরোধীদলের যে অভিযোগ, তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি সম্ভবত ‘ভোটারবিহীন একচেটিয়া নির্বাচন’ এর আয়োজন৷ তো এমন একটি বিতর্কিত নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজনের ভোট দেওয়ার ছবি বিরোধীদের কাছে ভিন্ন বার্তা দেয়৷

বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে কাজ করার সুবাদে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ নিয়ে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে খবর বা লেখা ছাপানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ৷ এ কাজটি আরো কঠিন হয়ে গিয়েছে, সোশাল মিডিয়ার কারণে৷ কেননা, ঘটনা ঘটার সাথে সাথে সোশাল মিডিয়ায় এত ধরনের ‘মতবাদ' প্রচার হতে থাকে, যেটি আসলে মূল ঘটনা বুঝতে সহায়তা করার বদলে ঘটনাটিকেই ঢেকে ফেলে৷

প্রথমে সংবাদকর্মী হিসেবে কেন চ্যালেঞ্জিং সেটি আগে বলে নিই৷ ধরা যাক, একটি জায়গায় কোনো সংখ্যালঘু পরিবারের নারী ধর্ষিত হয়েছেন এবং একইসাথে তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে৷ এ খবরটি নিউজরুমে এসে পৌঁছানোর সাথে সাথেই সেটি সাম্প্রদায়িক হামলা কিনা, সেটি নিয়ে যাচাই-বাছাই করতে হয়৷ বেশিরভাগ সময়ই দেখা গেছে, সাম্প্রদায়িক হামলার ছায়ায় আসলে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা করা হয়েছে, পূর্ব শত্রুতা বা অন্য কোনো বিরোধের জের ধরে৷ যারা হামলা করেছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ধর্মীয় চেতনা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজটি করেছে, তেমন নয়৷

ঘটনা পরিষ্কার হওয়ার আগেই ‘প্রগতিশীল' নামধারী একটি দল সেটিকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ বলে চালানোর চেষ্টা চালায়৷ এর বিপরীতে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কেউ কেউ ‘বিধর্মীদের উপর হামলা, খুন, ধর্ষণ যে ঠিক’ তা বোঝানোর জন্য নানা হাদিস-কালাম নিয়ে উপস্থিত হন৷ এটি আসলে প্রকান্তাররে নিজেদের দোষই স্বীকার করে নেওয়া৷ আবার খবর দেওয়ার দৌড়ে এ ধরনের একটি ঘটনা সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রচারের সাথে সাথে দেখা গেল, ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী’ আরো অনেক জায়গাতেই একই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললো৷

একটি পক্ষ অবশ্য বাংলাদেশে কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর আক্রমণকেই ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ হিসেবে দেখেন এবং এর জন্য কেবল বাংলাদেশের ইসলামিস্ট দলগুলোকে দায়ী করেন৷ এর সাথে অবশ্যসম্ভাবীভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে জড়ানো হয়৷ এর পরপরই নির্যাতনের ঘটনায় আলোচনা আর সীমাবদ্ধ থাকে না৷ যোগ হয় সরকার ও বিরোধীদলের কথামালা ছোঁড়াছুঁড়ি৷ একসময় সুর্নির্দিষ্ট ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ ব্যাপারটি রাজনৈতিক ঘটনায় রূপান্তরিত হয় এবং তার আর কোনো বিচার হয় না৷

এ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক কোনো হামলার বিচার না হওয়ার এটি একটি বড় কারণ৷

এ আলোচনায় অবশ্যই ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নতুন মাত্রা যোগ করেছে৷ তবে বাংলাদেশে পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের উপর হামলাকে কখনোই ‘সাম্প্রদায়িক হামলা' হিসেবে চিহ্নিত করা হয় না৷ এটাকে জাতিগত নিপীড়নের আওতায় ফেলা হয়৷ যদিও আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, পাহাড়ে জাতিগত নিপীড়নের মুখোশে সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন চলে৷

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসী হামলার সাথেও আমরা ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ গুলিয়ে ফেলি৷ জমি-জিরাতের জন্য খুনোখুনিকেও এদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার রূপে উপস্থাপনের নজির কম নয়৷ এ বিষয়ে ২০১৮ সালে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একটি সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য তুলে ধরছি৷

২০১৮ সালে নির্বাচনের বছরে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে সংগঠনটি বলেছিল, ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছেন ৯০ জন, লাশ উদ্ধার হয়েছে ১৫ জনের (প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান), কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শাস্তি পাওয়ার ঘটনা রয়েছে ১০টি, অপহরণের ঘটনা ৩৯টি, নিখোঁজের ঘটনা ১৮টি, ধর্ষণ-চেষ্টার ঘটনা ১৪টি, ধর্ষণের ঘটনা ৩২টি, গণধর্ষণের ঘটনা ১৬টি, যৌন হয়রানির ঘটনা ২৬টি, প্রতিমা চুরির ঘটনা ১৪টি, মন্দিরে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ৭টি, প্রতিমা ভাংচুর ১৬৯টি, মন্দিরে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৫৮টি, শ্মশান/ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ২১টি, দখলের অপপ্রয়াস ১১টি, বসতবাড়ি, জমিজমা দখল ও  উচ্ছেদের ঘটনা ১২২টি, দেশত্যাগের হুমকির ঘটনা ১১৫টি, বসতঘর বা সম্পত্তি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-লুটপাট-ডাকাতির ঘটনা ২৩৫টি, চাঁদাবাজির ঘটনা ২০টি, হত্যার হুমকির ঘটনা ৩১টি, হত্যাচেষ্টার ঘটনা ২৩টি৷ শারীরিক হামলার শিকার হয়েছেন ওই বছরে ৪৪৭ জন৷ দখল বা  উচ্ছেদের অপতৎপরতায় ৫৮৮টি পরিবার বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যে ব্যাপারটি গুলিয়ে ফেলেছে, সেটি হলো অপরাধের প্রত্যেকটি ঘটনার সাথেই কোনো-না-কোনোভাবে সেই ঘটনার শিকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে৷ এর সবকয়টিকে আমি কোনোভাবেই ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ বলতে নারাজ৷ তার মানে কিন্তু এটা নয় যে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন' ঘটছে না৷ ঘটছে৷ কিভাবে? সেই প্রসঙ্গে আসবো আরেকটু পরে৷ 

তার আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনের বছরের পরিসংখ্যানটি দেখে নেই৷ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর সহিংসতার শিকার হন হিন্দুরা৷ ৭৬১টি হিন্দু বাড়ি-ঘর, ১৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ২৪৭টি মন্দির-মণ্ডপে হামলা হয় ওই বছর৷ তখন নিহত হন একজন৷ এই পরিসংখ্যন বাস্তবে আরো বেশি বলে অবশ্য হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে৷

আসক-এর মতে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নয় বছরে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে৷

ধর্মীয় জাতিগোষ্ঠীর দিক থেকে বিবেচনা করলে আমাদের পাশের দেশ ভারত ও মায়ানমার একটি হিন্দু অধ্যুষিত এবং অপরটি বৌদ্ধ অধ্যুষিত৷ তাই নির্বাচন ছাড়াও ওই দুইদেশের সঙ্গে তৈরি হওয়া যেকোনো বিরোধে কিংবা ওই দুই দেশে মুসলিমদের উপর অত্যাচারের খবর প্রকাশ হলেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা হুমকির মধ্যে থাকে৷ এখানে প্রতিবেশী দেশ যে সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটি বড় নির্ধারক সেটি প্রমাণ করা যায় খুব সহজেই৷ সিরিয়া, ইরাক কিংবা ইরানে মুসলিমদের উপর খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ আমেরিকা বা ব্রিটেন হামলা করলেও, বাংলাদেশে কিন্তু খ্রিস্টানদের উপর আক্রমণ হয় না!

অর্থাৎ, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের লক্ষ্যেই প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সাথে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়৷ এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে হিন্দুরা সবচেয়ে বড় টার্গেট সম্ভবত এ কারণে যে, ভারতীয় উপমহাদেশ ভাগ হওয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব এখানকার জনগণের বড় অংশ চরমভাবে বিরোধিতা করে৷ এটা যেমন ধর্মীয় কারণে করেন, পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিকোণ থেকেও৷

এ প্রশ্ন করা অবান্তর নয় যে, দেশে বসবাসরত দেড় কোটি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে পরিমাণ মানুষ খুন-হত্যা-ধর্ষণের শিকার তা কি সামগ্রিক অপরাধপ্রবণতার হারের চেয়ে বেশি? খুব বেশি? নাকি কম? নির্বাচনের বছর ছাড়া বাকি বছরগুলোতে এই সংখ্যা স্বাভাবিক জনগোষ্ঠীর অপরাধের চেয়েও কম হতে পারে৷

তাহলে কেন নির্বাচন এলেই ‘হিন্দু জনগোষ্ঠী’ টার্গেট হয়? কেনই বা এরকম একটি ভীতি ছড়িয়ে পড়ে যে, তাদের উপর সহিংসতা হবে? শহরের চেয়ে মফস্বল ও অনুন্নত অঞ্চলের দিকেই কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটে?

হয়ত হিন্দু ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মনস্তত্বেও রাজনৈতিকভাবে এখানকার দুইটি বড় রাজনৈতিক দল এটি প্রোথিত করেছে- হিন্দুরা এদেশে নিরাপদ নয়৷ একদল নিরাপত্তা দেওয়ার রাজনীতি করে তাদের ভোট হাতিয়ে নিতে চায়, আরেকদল তাদেরকে খেদিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়৷

দেশে অন্যান্য সংখ্যালঘুও আছেন৷ জনগোষ্ঠীর সংখ্যার বিচারে তারাও নানা ধরনের নিপীড়নের শিকার হন৷ বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতনের হিসেব কতটুকু করা হয়? কিন্তু তারা ভোটের রাজনীতিতে বড় নিয়ামক নন৷ তাই যেকোনো ভোটের আগে ‘হিন্দু ফোকাস’-নির্ভর সংবাদ পরিবেশন বেড়ে যায়৷ নির্বাচনের আগ থেকে এই ধর্মাবলম্বীদের দুইটি বড় রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে যে ফলাফল যা-ই হোক তাদের কিছু হবে না৷

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো এটা একটি প্রচ্ছন্ন হুমকিও বটে৷ বুঝিয়ে দেওয়া যে তুমি দুর্বল৷

তাহলে কি এ অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি নেই? এর সমাধানই বা কী? আমার কেন যেন মনে হয়, আধখেচরা সাংস্কৃতিক আন্দোলন দিয়ে এ বিপুল জনগোষ্ঠীকে কখনোই বশে আনা সম্ভব নয়৷ সোশাল মিডিয়ার যুগে তা আরো সম্ভব নয়৷

তাহলে কী করতে হবে? অন্তত নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঠেকাতে হলে সবার প্রথমে সকলের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে৷ নির্বাচনের আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হুমকি-ধামকির ব্যাপারটি মিডিয়ায় আসার চেয়ে আমার মনে হয়- ‘বিশেষ সেল’ গঠন করে সেখানে পাঠানো উচিত৷ মিডিয়ায় খবর এলে আরো দুই-চারটি জায়গায় বদজনেরা ইন্টারেস্টেড হয় একটি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার ব্যাপারে৷ ‘বিশেষ সেল’-এর কাজ থাকবে সবকয়টি অভিযোগ দ্রুততম সময়ে খতিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া ও দোষীদের শাস্তি দেওয়া৷ নির্বাচনের আগে থেকে এরকম দুয়েকটি ত্বরিত-চকিত শাস্তি প্রেক্ষাপট বদলে দেবে৷

হাবিব ইমরান, সাংবাদিক
হাবিব ইমরান, সাংবাদিকছবি: DW/S. Burman

এখানেই থামলে হবে না৷ নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে ‘বিশেষ সেল’ যেন নির্বাচনপ্রার্থীদের জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসতে পারে৷ যেমন, কোনো একটি এলাকায় যদি এরকম ভয়ভীতি দেখানো হয়, অনলাইনে পরিচয় গোপন করে মানুষ অভিযোগ জানাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে বিশেষ সেলের ইউনিট ওই এলাকায় নির্বাচনের প্রার্থীদের ডেকে সমাধানের জন্য জোর দিতে পারেন৷ ক্ষেত্রবিশেষে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে জোরালো অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভোট কেটে জরিমানাও করতে পারে, কিংবা প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারে৷ নির্বাচন কমিশনে বড় এলএইডি লাগিয়ে- প্রার্থীদের কোনো ধরনের অভিযোগের বিরুদ্ধে সতর্কীকরণ কার্ড প্রদর্শন করা যেতে পারে নির্বাচনের আগের এক মাস৷ অর্থাৎ ‘ডিমেরিট পয়েন্ট' হতে পারে একটি কার্যকর পদক্ষেপ৷ 

নির্বাচনের আগে-পরে ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা’ দমনে আমাদের প্রস্তাবগুলো সবসময়ই ধোঁয়াটে৷ কোনোমতে বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরত যাওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার, সাংস্কৃতিক বিপ্লব ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা বলে নির্বাচন কমিশন তার দায়টুকু সারে৷ কেননা, জাতীয় নির্বাচনের পরে তাদের সত্যিকার অর্থে আর কিছু করার থাকে না, নানা চাপে৷ ফলে যারা সাম্প্রদায়িক হামলা চালায় তারা থাকে নির্ভার৷

‘ডিমেরিট পয়েন্ট’ নির্বাচন কমিশন চালুর উদ্যোগ নিলে, একজন ব্যক্তি বা প্রার্থীর ডিমেরিট পয়েন্ট খুব খারাপ হলে- দল নির্বাচন করার অনুমতি দিলেও নির্বাচন কমিশন তা আটকে দিতে পারে৷ অর্থাৎ, প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচনের আগে পাঁচ বছর ধরে তার এলাকায় সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে মদদ দিচ্ছে কিনা সেই নজরদারিতে রাখা৷ আমার কেন যেন মনে হয়, এতেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান