1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিদ্ধান্ত নয়, স্বীকৃতি দিয়ে শেষ কোপেনহেগেন সম্মেলন

১৯ ডিসেম্বর ২০০৯

কোনরকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই একটি স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে শেষ হলো কোপেনহেগেন সম্মেলন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হিসাবে উল্লেখ করলেও বিশেষজ্ঞরা এটিকে বলছেন ব্যর্থতা৷

https://p.dw.com/p/L90J
ছবি: AP

১৮ ডিসেম্বর সারা রাত আলোচনার পর ১৯ তারিখ বেলা ১২টার সময় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একটি সমঝোতা হয়েছে, যাকে চুক্তি বলা হচ্ছে না৷ তবে এটি এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়নি - যার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর মেক্সিকোতে অনুষ্টিতব্য ১৬তম জলবায়ু সম্মেলনের জন্য৷ বান কি-মুন বলেন, কোপেনহেগেন সম্মেলন হয়তো সকলের আশা পূরণ করতে পারবে না, বা এটিকে একটি সফল চুক্তি বলা যাবে না৷ তবে এটি একটি সফল সম্ভাবনার শুভ সূচনা৷ তিনি দীর্ঘ ৩৪ ঘন্টার টানা আলোচনার পর বলেন, অবশেষে আমরা কোপেনহেগেন সমঝোতাকে একটি স্বীকৃতি দিতে পেরেছি৷

তিনি একটি আইনগত চুক্তির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, এটি থেকে একটি আইনগত চুক্তিতে আসা এখন বিশ্বের জন্য জরূরি৷ কিন্তু কোপেনহেগেনে সেটা সম্ভব হলো না৷ তিনি দেশগুলোকে সামনের দিকে তাকাতে বলেন যা'তে ভবিষ্যতে একটি সফল চুক্তি সম্ভব হয়৷

১৮ ডিসেম্বর ওবামা ২৮ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বসে একটি প্রস্তাবনা ঠিক করেন৷ এরপর যখন সেই প্রস্তাবনাটি রাষ্ট্রপ্রধানদের সামনে উপস্থাপন করা হয়, তখন বাকি ১৫৫ টি দেশ তাদের জিজ্ঞাসা এবং আপত্তি তুলে ধরে৷ এবিষয়ে জাতিংঘের পলিসি এ্যান্ড প্ল্যানিং বিভাগের সহকারি সচিব রবার্ট ওড ডয়চে ভেলে কে বলেন, বাকি দেশগুলোর নানা প্রশ্ন এবং আপত্তি কোপেনহেগেন সমঝোতাকে এতোটা দীর্ঘায়িত করেছে৷ বাকি দেশগুলো তাদের মতামত এখনই না জানালেও, আশা করা হচ্ছে, ২০১০ সালে মেক্সিকোতে যে জলবায়ু সম্মেলন হবে, সেখানে দেশগুলো একযোগে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কাজ করবে৷ তিনি আরো বলেন, ১৬তম সম্মেলনে কিয়োটোকে দ্বিতীয় স্তরে নিয়ে যাবার ব্যাপারে কাজ করা হবে৷ পাশাপাশি সম্মেলনের আলোচনাও চলবে৷ কোপেনহেগেন সমঝোতার কোন আইনগত ভিত্তি নেই৷ এমনকি দেশগুলোর, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কার্বন নির্গমনের মাত্রার বিষয়ে কোন মাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি৷ তবে বিশ্বের তাপমাত্রা ১৯৯০ সালের তুলনায় দুই ডিগ্রির উপরে উঠবে না, এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে৷ এছাড়া প্রতিটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ তাদের কার্বন নির্গমনের মাত্রার হিসাব রাখবে৷ এবং জাতিসংঘের কাছে রিপোর্ট জমা দেবার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এই সমঝোতা পত্রে৷ এই পত্রে ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে৷

সমঝোতাপত্র রাষ্ট্রপ্রধানদের সামনে উপস্থাপন করা হলে পাঁচটি দেশ নিকারাগুয়া, কিউবা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া এবং ভেনেজুয়েলা এর তীব্র বিরোধিতা করে৷ অন্যদিকে মালদ্বীপের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশ সমঝোতাপত্রের অনুমোদন দেয় এবং অন্যদেরও অনুমোদন দেবার জন্য আহ্বান জানায়৷

এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি এই সমঝোতাপত্র সম্পর্কে বলেছেন, টেক্স এ যা আছে, তা কোনভাবেই ঠিক নয়৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোর বড় সংগঠন জি ৭৭-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আফ্রিকান দেশগুলোকে ধংস করার জন্য এই ধরণের সমঝোতা করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, আলোচনা চরম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে৷

বিশ্বের অনেক পরিবেশবাদী সংগঠন সমঝোতাপত্রের সমালোচনা করেছে৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী, কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলন থেকে

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী