1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুনামি প্রতিরক্ষায় জাপানও অসহায়

২৬ মার্চ ২০১১

সুনামি কথাটাই জাপানি৷ উনবিংশ শতাব্দীতেই জাপানি চিত্রকর হোকুসাই এঁকেছিলেন সুনামির ছবি৷ অথচ গত ১১ই মার্চের সুনামি জাপানকে বিধ্বস্ত করে দিয়ে গেল৷

https://p.dw.com/p/10hlY
মিয়াগি জেলায় সুনামি আসার ছবি (কিয়োদো নিউজ)ছবি: dapd

টারো নামের ছোট্ট জেলেদের গ্রামটিকেই ধরা যাক৷ গ্রামটি ১৮৯৬ এবং ১৯৩৩ সালের সুনামিতে ধ্বংস হয়েছে৷ পরে ১৯৫৮ সালে একটি আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘের এবং ১০ মিটার উঁচু কংক্রিটের প্রাচীর গড়ে তাকে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হয়৷ এবারও সুনামি আসার খবর শুনে প্রথমে আদৌ ঘাবড়াননি টারোর মানুষ৷ এমনকি তাদের নিজস্ব ‘‘চীনের প্রাকারের'' ওপরে চড়ে সেই সুনামি আসা দেখারও চেষ্টা করেছিলেন৷

কিন্তু সেই সুনামি আসে এক্সপ্রেস ট্রেনের গতিতে এবং অবলীলাক্রমে দশ মিটার উচ্চতার কংক্রিটের দেওয়াল উপছে টারোকে ভাসিয়ে দেয়, মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়৷ কাজেই টারোর চীনের প্রাকার এখনও দাঁড়িয়ে আছে - টারো জনপদটাই আর নেই৷

শুধু টারো কেন, জাপানের গোটা পূর্ব উপকূল ধরে আছে নানা সামুদ্রিক বাঁধ অথবা ডাঙায় নদীর বাঁধ৷ আছে নানা ধরণের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সুনামি সতর্কতা প্রণালী৷ কিন্তু তার কোনো কিছুই টারো কিংবা মিনামিসানরিকু'র ট্র্যাজেডি রুখতে পারেনি৷ কাজেই এখন প্রশ্ন উঠেছে, মানুষের চিন্তাধারাতেই কি কোনো গলদ আছে? আমরা কি প্রকৃতির রোষের মুখে আমাদের স্বনির্মিত প্রতিরক্ষার উপর বড় বেশী আস্থা রেখেছি? যারা দু'তিন মিটার উচ্চতার সুনামি প্রত্যাশা করছে, তারা যদি ১৫ মিটার, এমনকি ৩০ মিটার উচ্চতার একটি সুনামির ঢেউ, ঐ নিরেট জলের পাহাড় ধেয়ে আসতে দেখে - তাহলেও কি তাদের ঐ একই আস্থা থাকে?

Flash-Galerie Japan nach dem Erdbeben und Tsunami
সুনামির পর মিনামিসানরিকুছবি: AP

এখন জাপানের বিশেষজ্ঞরা বলছেন: শুধু ‘হার্ডওয়্যার' দিয়ে সুনামি আটকানো সম্ভব নয়৷ পূর্ত প্রযুক্তিবিদরাও সে'কথা বলেছেন৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে: যেখানে সুনামির সম্ভাবনা আছে, সেরকম জায়গায় বাড়িঘর, আবাসিক এলাকা নির্মাণের উপযোগিতা নিয়েই ভাবতে হবে৷ উপকূলবর্তী জনপদগুলিকে নতুন করে ‘ডিজাইন' করতে হবে৷ আসলে সুনামি প্রতিরক্ষা যে শুধুমাত্র মানুষের কল্পনাশক্তির উপর নির্ভর করে থাকতে পারে না, বিপদ যে যে কোনো মুহূর্তে যাবতীয় শঙ্কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, ১১ই মার্চের সুনামি সেটাই আবার নতুন করে প্রমাণ করে দিয়ে গেল৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার