1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুর সম্রাজ্ঞাীর বিদায়

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

২৭ দিনের লড়াই শেষে স্তব্ধ কোকিলকন্ঠ৷ মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে রোববার সকালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর৷

https://p.dw.com/p/46b2u
Indien Mumbai | Lata Mangeshkar
৯২ বছর বয়সে রোববার মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকর৷ছবি: AFP

দীর্ঘ সাত দশক ভারতীয় উপমহাদেশের সংগীতভক্তদের সুরের মায়াজালে বেঁধে ৯২ বছর বিদায় নিলেন এ কিংবদন্তি৷

ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানায়, চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এ শিল্পী৷ সম্প্রতি তার অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল৷ কিন্তু শনিবার হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে৷

লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর, ভারতের ইন্দোরে৷ আগে নাম ছিল হেমা৷ তবে মৃত বড় বোনের নাম লতিকা হওয়ায় তার নাম হয়ে যায় লতা৷

বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকর ছিলেন ধ্রুপদ শিল্পী, মারাঠি থিয়েটারের অন্যতম পুরাধা৷ তার কাছেই লতার গান শেখার শুরু৷ কৈশোরেই বাবাকে হারান৷ তবে গান শেখা ছাড়েননি৷

গত শতকের চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করা লতা অল্প সময়েই হয়ে উঠেছিলেন অপরিহার্য একটি নাম৷

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে হাজারের বেশি সিনেমায় গান করেছেন লতা৷ ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি বিদেশি ভাষাতেও তিনি গান করার মধ্য দিয়ে রেখেছেন প্রতিভার অনন্য সাক্ষর৷ আর তাই অনেকের বিচারে ভারতের সর্বকালের সেরা সংগীত শিল্পীদের একজন তিনি৷

কিংবদন্তির এ বিদায়ে বাংলা ভাষাভাষীরাও তার গাওয়া গান স্মরণ করছেন৷ বাংলার একাধিক প্রজন্মের কাছে লতার কণ্ঠ ছিল স্বপ্নের মতো৷ বাংলা চলচ্চিত্রে প্রায় দু'শ গান আছে এ গুণীর৷ তার কণ্ঠের ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে', ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে', ‘নিঝুম সন্ধ্যায়', ‘কে প্রথম কাছে এসেছি', ‘সাত ভাই চম্পা', ‘যা রে উড়ে যারে পাখি', ‘বলছি তোমার কানে', ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়' এর মত বহু গান বাংলা ভাষাভাষীদের মনে গেঁথে থাকবে বহুকাল৷

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও তার শিল্পী জীবনের আলাদা একটি অধ্যায়৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য যে ভারতীয় শিল্পীরা এগিয়ে এসেছিরেন তার মধ্যে এ সুর সম্রাজ্ঞী অন্যতম৷

তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করেছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর৷ সে ঘটনা নিয়ে তিনি টুইটারেও একটি বার্তা প্রকাশ করেছিলেন৷ সে বার্তায় তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে এসে সংগীত পরিবেশনের স্মৃতিচারণা করেছিলেন৷

উপমহাদেশের সংগীত জগতের রাণী আকাশছোঁয়া খ্যাতির পথে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার৷

২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন সম্মান অর্জন করেন৷ ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন৷ তাছাড়া ১৯৬৯ সালে পদ্মভূষণে এবং ১৯৯৯ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷

কিংবদন্তির বিদায়ের শোকে কাতর তার উপমহাদেশসহ সারা বিশ্বের সঙ্গীতভক্তরা৷ রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয় রাষ্ট্রপতির তরফ থেকেও।

তাছাড়া শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি, ক্রীড়াজগতসহ ভারতের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সম্রাজ্ঞীর শেষ বিদায়ের ক্ষণে উপস্থিত ছিলেন৷

আরআর/জেডএ (আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রথম আলো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)