1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্ফটিকের সাহায্যে সমুদ্রের দিক নির্ণয় করতো ভাইকিং জাতি

২ নভেম্বর ২০১১

আজকের এই জিপিএস'এর যুগে মোবাইল ফোনই দেখিয়ে দেয় উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম কোনদিকে৷ কিন্তু কম্পাস আবিষ্কারের আগে মানুষ যখন সমুদ্রপথ চষে বেড়াতো, তখন তারা কীভাবে দিক নির্ণয় করতো?

https://p.dw.com/p/133YP
এমন সাধারণ জাহাজে চড়ে সমুদ্র চষে বেড়াতো ভাইকিংরাছবি: AP

প্রায় এক হাজার বছর আগে ইউরোপের উত্তরে নর্ডিক জাতি সমুদ্রযাত্রায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছিল৷ ভাইকিং নামেই তারা বেশি পরিচিত৷ সাহসী ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এই জাতির নাম শুনলেই লম্বা দাড়ি ও মাথায় শিং লাগানো হেলমেট পরা বিশাল চেহারার মানুষের ছবি মনে ভেসে ওঠে৷ তবে তারা সত্যি শিং পরে বেড়াতো কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ যাই হোক, কলম্বাস অ্যামেরিকা আবিষ্কারের বহুযুগ আগে তারা আইসল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড ও সম্ভবত উত্তর অ্যামেরিকার ভূখণ্ডেও পৌঁছে গিয়েছিল৷ দিনের বেলায় সূর্য এবং রাতের আকাশে চাঁদ-তারা দেখে তারা যে সঠিক দিক নির্ণয় করতে পারতো, তার প্রমাণ আগেই পাওয়া গেছে৷ সমুদ্রের ঢেউ ও স্রোতের গতিপথ সম্পর্কেও তাদের ভালো ধারণা ছিল৷ কিন্তু কুয়াশাভরা বা মেঘলা দিন বা রাতে যখন আকাশ দেখা যেত না, তখন তারা কী করতো?

WM Bilder des Tages 10.06.2006 Schwedischer Fan
ভাইকিং সাজার বাসনা আজও অনেকের রয়ে গেছেছবি: AP

কিংবদন্তি অনুযায়ী তাদের কাছে ছিল রহস্যময় এক ‘স্যান্ডস্টোন' বা রহস্যময় এক ধরণের স্ফটিক পাথর, যা তাদের সঠিক পথ দেখিয়ে নিয়ে যেত৷ মেঘলা দিনেও সেই স্ফটিক ভেদ করে সূর্যের আলোর ছটা সঠিক পথ দেখাতে পারতো বলে অনেকে বিশ্বাস করে৷ তবে এতদিন এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি৷ এবার এক আন্তর্জাতিক গবেষক দল এই রহস্যের সমাধান করতে পেরেছে বলে দাবি করছে৷ তাদের মতে, ভাইকিং'রা আসলে এক ধরণের স্বচ্ছ ক্যালসাইট ক্রিস্ট্যাল বা স্ফটিক ব্যবহার করতো, যা ‘আইসল্যান্ড স্পার' নামেও পরিচিত৷ এভাবে সূর্যের সঠিক অবস্থান নিখুঁতভাবে নির্ণয় করতে পারতো তারা৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়া মোটেই সহজ নয়৷ হিসেব-নিকেশ করতে অঙ্ক ও জ্যামিতির ভালো জ্ঞান থাকা চাই৷ মেঘলা ও প্রায় অন্ধকার পরিবেশেও আলোর ছটার অতি সূক্ষ্ম পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য বোঝার জন্য দৃষ্টিশক্তিও ভালো হতে হবে৷

Symbolbild Kompass Richtung Reisen
কম্পাস যুগের আগেও দিক নির্ণয়ের উপায় বার করেছিল ভাইকিংরাছবি: Fotolia/Abdone

১৫৯২ সালে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজের ভগ্নস্তূপ থেকে সম্প্রতি এমন একটি ‘আইসল্যান্ড স্পার' উদ্ধার করা হয়েছে৷ ফলে এর প্রচলন সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহ রইলো না৷ এমনকি কম্পাস'এর আবিষ্কারের পরেও ‘আইসল্যান্ড স্পার'এর কদর কমে নি৷ কোনো কারণে সেই কম্পাস কাজ না করলে স্ফটিকই ছিল ভরসা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক