1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১০৫ বছর বয়সেও ব্লগার!

৪ জুলাই ২০১৮

১০০-য় পা দেবার পর আত্মীয়স্বজনদের কাছে থেকে একটি পার্সোনাল কম্পিউটার উপহার পেয়েছিলেন সুইডেনের ডাগনি কার্লসন৷ সেই থেকে তাঁর কম্পিউটারের হাতেখড়ি – আজ তিনি সুইডেনের একজন নামকরা ব্লগার৷

https://p.dw.com/p/30nVS

শতবর্ষী ব্লগার

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কফি আর খবরের কাগজ ছাড়া ডাগনি কার্লসনের চলে না৷ ওটা হল তাঁর রোজকার রুটিন৷ ডাগনির বয়স? একশ পাঁচ বছর৷ তবু তাঁর জীবনীশক্তি বা জানবার ইচ্ছায় কিছুমাত্র ভাটা পড়েনি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার জীবনটা আজ, এখানে৷ আমি আগামীকালের কথা, কাল যে আমার মরণ হতে পারে, সেকথা ভাবি না৷ মৃত্যু তো আসবেই৷''

ডাগনি কার্লসনের জীবন শেষ হতে অবশ্য এখনও অনেক বাকি – কেননা ডাগনির কৌতূহল অসীম: স্টকহোমে তাঁর ছোট্ট ফ্ল্যাটটির জানলার বাইরে কী ঘটছে না ঘটছে থেকে শুরু করে ডাগনি বেশ অনেকটা সময় কাটান ইন্টারনেটে৷

কম্পিউটার হল তাঁর বন্ধু, যার মাধ্যমে বিস্তৃত বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে চলেন ডাগনি৷ আত্মীয়স্বজনেরা ডাগনিকে একটি পিসি উপহার দিয়েছিলেন – ডাগনির বয়স তখন সবে ১০০ ছুঁয়েছে৷ ডাগনি তখন সেই বিদঘুটে যন্ত্রটির রহস্য ভেদ করতে শুরু করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘৯৯ নাকি ১০০ বছর বয়স থেকে আমার কম্পিউটারটা আছে... লোকে বলে, ৯০ পার হলে নাকি আর কম্পিউটার কেনার কোনো অর্থ হয় না৷''

ইতিমধ্যে পিসি ছাড়া তাঁর দিন কাটে না৷ কম্পিউটার ছাড়া বেঁচে থাকা ডাগনির পক্ষে সম্ভব বটে, তবে নিরর্থক৷ ডাগনি বলেন, ‘‘কম্পিউটার আমার অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কম্পিউটার থাকায় আমার বান্ধবীদের সঙ্গে আলাপ করতে পারি – ডাকটিকিটের দরকার পর্যন্ত পড়ে না৷ খবর পড়তে পারি৷ কম্পিউটার আমার খুব ভালো লাগে৷''

শুধু পড়ে মজা নেই, তাই ডাগনি কার্লসন লিখেও থাকেন৷ ১০৫ বছর বয়সের মহিলা একজন নিয়মিত ব্লগার৷ তাঁর নিজের ডিজিটাল ডাইরি লেখেন ডাগনি৷ নাম দিয়েছেন: ‘ব্লগা মেট মে', আমার সঙ্গে ব্লগ করো৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার চিরকালই লেখক হবার ইচ্ছে ছিল, বিশেষ করে যখন ছোট ছিলাম৷ কিন্তু দুনিয়ায় এতো ভালো বই আছে যে, তার সঙ্গে আমার একটা খারাপ লেখা যোগ করা আমার কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়৷ ব্লগ লেখার সময় কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর দরকার নেই – যা প্রাণ চায়, তাই লিখতে পারি৷ কিন্তু আমার ১০৫ বছর বয়স না হলে সেদিকে কেউ তাকাতো না৷''

কিন্তু ডাগনির বয়স সত্যিই ১০৫, আর তাঁর ফ্যানদের সংখ্যাও অগুনতি৷ তিনি বলেন, ‘‘ন'বছর বয়সের ছেলেমেয়েরা কমেন্ট লেখে, ‘তুমি সত্যিই ‘কুল'৷ আমার খুব গর্ব হয়৷''

তবে ডাগনির সব ফ্যানই যে ন'বছরের, এমন নয়৷ রাজধানী স্টকহোম থেকে দক্ষিণমুখে পাঁচ ঘণ্টা দূরে লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ধক্যবিদ্যা সমিতির একটি পুরস্কারে ভূষিত হতে চলেছেন ডাগনি৷ কেননা তিনি ও তাঁর ব্লগ সারা দেশের প্রবীণ-প্রবীণাদের পক্ষে একটি আদর্শ৷ প্রশংসাপত্রে তাই বলা হয়েছে৷ দৃশ্যত ডাগনিরও পুরস্কার নিতে, অভিনন্দিত হতে বা তাঁর ব্লগিং সম্পর্কে কথাবার্তা বলতে ভালোই লাগে৷ তিনি বলেন, ‘‘একদিন যদি আমার ব্লগ না লিখি, তো সকলে সঙ্গে সঙ্গে ভাবে – আমি মারা গেছি৷''

প্রায় ২,০০০ ইউরো পরিমাণ পুরস্কারের অর্থ ডাগনি তাঁর জন্মদিনের পার্টির জন্য খরচ করবেন বলে স্থির করেছেন৷ তবে তাঁর সেরা সময় কাটানোর উপায় হল বাড়িতে, কম্পিউটারের সামনে বসে৷

তাঁর ব্লগ সম্বন্ধে যে সব মন্তব্য আসে, তার সবই খুব ভদ্র-সভ্য৷ তাঁকে আর আজকাল কেউ গালাগালি দেয় না – জানালেন ডাগনি৷ তবে যে সব প্রবীণ-প্রবীণা ইন্টারনেটে সক্রিয়, তাদের সম্পর্কে যে বিরূপ মনোভাবও রয়েছে, সেটা তাঁর অজ্ঞাত নয়৷ ডাগনি বলেন, ‘‘বুদ্ধিমান বুড়োমানুষও যে থাকতে পারে, সেটা অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে না৷''

কম্পিউটার বুড়ো হতে দেয় না, বলেন ডাগনি কার্লসন৷ তিনি যেমন ১০৫ বছরেও তরতাজা৷

ক্লাস অলিভার রিশটার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য