চাপা কান্নায় বুক ভেঙে যাচ্ছিল | পাঠক ভাবনা | DW | 15.07.2015
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

চাপা কান্নায় বুক ভেঙে যাচ্ছিল

রাজন হত্যার প্রতিবাদে তোলপাড় সংবাদমাধ্যম আর স্যোশাল মিডিয়া৷ স্বাভাবিকভাবেই ডয়চে ভেলের ফেসবুকও তার ব্যতিক্রম নয়৷ পাঠকরা দেশ, জাতি ও সমাজের প্রতি নানাভাবে ধিক্কার জানান এবং এই নির্মম হত্যার ন্যায় বিচার হোক, চান সকলে৷

‘‘যে দেশে আইনের শাসন নাই, সে দেশে এ রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে৷'' এ মন্তব্য ডয়চে ভেলের ফেসবুকবন্ধু সাইফুল ইসলামের৷ আর রুহুল আমিন জানিয়েছেন, ‘‘বার বার শরীর শিউরে উঠছিল৷ চাপা কান্নায় বুক ভেঙে যাচ্ছিল৷ মানুষ এমন নিষ্ঠুর হয়ে কি করে!''

রাজন হত্যার ভিডিওটি দেখে পাঠক মো. আইয়ুব তাঁর আবেগ প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘‘আমি পুরা ভিডিওটা দেখতে পারলাম না৷ আর সহ্য হচ্ছিলো না, হাত পা কাঁপছে৷ এরা মানুষ না পশু?

‘‘অপরাধীকে এমন ভাবে শাস্তি দিতে হবে, যাতে করে আর কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না দেখায়৷'' এই মন্তব্য ইমরান অভির৷

কী পাশবিক নির্যাতনই না চালানো হয়েছে রাজনের ওপর! ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই রাজনের মৃত্যুর কারণ৷ তার শরীরে নাকি ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷'' এ ব্যাপারে ডয়চে ভেলের ফেসবুক-বন্ধু দীপ্র ফরিদের কিছু প্রশ্ন, ‘‘কেন আমাদের শিশুরা এখনও নিরাপদ নয় সমাজে? কেন আমরা বার বার হেরে যাই? এই অমানুষগুলি সমাজে থাকে কী ভাবে?''

আমাদের পুরনো বন্ধু অসিত কুমার দাস মিন্টুর স্পষ্ট কথা, ‘‘রাজন হত্যার বিচার হতে হবে৷ কেউ নিজের ইচ্ছায় আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারবেন না৷ দেশবাসী তাকিয়ে আছে রাজন হত্যার কী বিচার হয়, সেই দিকে৷ আমরা ন্যায়বিচার আশা করছি৷''

ন্যায়বিচার আশা করছেন মহসিন প্রধান, মো. শফিকসহ আরো অনেক বন্ধু৷

ওদিকে জাকারিয়া আহমেদ শকিল তো অপরাধীর শুধু ফাঁসি নয়, একেবারে জবাই করা লাশ দেখতে চান৷ তবে সোহেল রিপুর মতে বাঙালি কোনো কিছু ঘটার পর মাথা নাড়াচাড়া দিয়ে উঠে৷ এখানে প্রশ্ন এসে যায়, ‘‘কোনো কিছু ঘটার আগে কেন বাঙালি সচেতন বা সাবধান হয় না?''

ঠিক সেই কথাটাই তুলে ধরেছেন পাঠক মাহমুদা খানম মৌসুমী৷ তিনি রাজন হত্যার ভিডিওটি দেখার পর আরো একটু খোলাসাভাবে লিখেছেন, ‘‘যারা ভিডিও করেছে, তারা ওই মাসুম বাচ্চাটাকে কেন মারতে দিয়েছিল৷ কেন বাধা দেয়নি সবার সামনে যখন ওই শয়তানরা বাচ্চাটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলল৷ ও আল্লাহ, আমরা এ কোন পৃথিবীতে বাস করছি?'' রাজন হত্যাকারীদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হোক-আকুল আবেদন তাঁর৷

জীবন লিখেছেন ফেসবুকে অপরাধীকে সৌদি আইনের আওতায় এনে যেন মাথা কেটে হত্যা করা হোক৷ অন্য পাঠকরা তাঁর সাথে একমত কিনা তিনি জানতে চেয়েছেন৷

রাজন হত্যার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাইছেন সামসুল হক, ‘‘যেন কেউ আর এমন সাহস না পায়৷''

পাঠক লাভলু দুঃখ করে লিখেছেন, ‘‘খুব কষ্ট লাগে যখন ভাবি, কী একটা অসভ্য দেশে বাস করি৷''

মাহবুব আলম রাজন হত্যাকরীদের ফাঁসি চান৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘ওদের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দলন চালিয়ে যেতে হবে৷ অনতি বিলম্বে অপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করা হোক৷'' মো.নাসিমেরও একমত৷

শহীদুল ইসলাম বাঁধন চাইছেন যে, ‘‘প্রকাশ্যে অপরাধীর শিরশ্ছেদ করা হোক, কারণ সে জানোয়ারের মতো কাজ করেছে৷''

বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা নিয়ে সন্দিহান ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু তানভির আলম লিংকনের মন্তব্য, ‘‘যতদিন দেশে আইন সবার জন্য সমান না হবে, যতদিন দেশে আইন টাকার কাছে নত থাকবে, যতদিন আমরা কাজ না করে বয়ান দিতে থাকব, যতদিন অমরা সত্যিকার অর্থে দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসতে না পারব, যতদিন আমরা ভালো কিছু না করে খারাপ কিছুকে আকড়ে ধরে রাখব, ততদিন রাজন কাঁদবে, হারবে বাংলাদেশ৷''

ফিলিপ হাসান শুধু দেশের আইন ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে না দিয়ে শিশু নির্যাতন বন্ধের জন্য সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন এভাবে: ‘‘আসুন যে যেভাবে পারি, যেখানে থাকি, আমাদের আশেপাশে এ রূপ অনাচার-অত্যাচার হচ্ছে সেগুলো প্রকাশ করি৷''

সুহৃদয় একজন অ্যাডভোকেট৷ তিনি এ কাজে সহায়তা দেয়ার জন্য নিজেকে সামনে এনেছেন৷ বলেছেন, চলুন ‘লিস্ট' করে আমরা উনার ওয়ালে সব শিশু নির্যাতনের প্রমাণসহ অভিযোগ পাঠিয়ে দেই৷''

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লিখেছেন, ‘‘ঘটনাটা ঘটার পর পরই সব জায়গায় হইচই পরে যায়৷

অপরাধী কী করে আরবে পালাতে পারলো? সে পালিয়েছে না তাকে পালাতে সাহায্য করা হয়েছে?'' এটাই ওনার প্রশ্ন৷

ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু মোকসেদ আলী দোয়া করছেন পবিত্র মাহে রমজান মাসে আল্লাহ যেন শিশু রাজনকে জান্নাত দান করেন৷

ফেসবুক বন্ধু রানা বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডে খুবই বিরক্ত, হতাশ, নিরাশ৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘সরকার কিছু করতে পারবেনা, বিনা ভোটে সরকার, ভাবেন তাহলে কী হবে! যেই পশুরা এভাবে রাজনকে মারছে তারা দেখেন কেউ না কেউ আওয়ামী লীগের এমপির ভাই, ভাতিজা বা চামচা৷ বিচার করতে হবে জনগণকে, ফাঁসি ছাড়া কোনো কথা হবে না? এই সরকার তো দোষ না করলেও ফাঁসি দেয়, তাহলে এরা তো দোষ করছে৷'' সরকারের প্রতি তাই তাঁর আবেদন, ‘‘এদের ফাঁসি চাই৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

নির্বাচিত প্রতিবেদন