এই অনুরোধ ভারতের নদীয়া, ফুলিয়ার বন্ধু মনোজিৎ বসাকের৷ তবে ইমেলটি শুরু করেছেন তিনি এভাবে, ‘‘সুপ্রিয় ডয়চে ভেলে, হেমন্তের রঙিন সুবাসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাই সবাইকে৷ আশা করি সকলে কুশলে আছেন৷ ডয়চে ভেলের সাথে আমার দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্কে এই প্রথম কিছু প্রাপ্তি ঘটে ছিল গত আগস্ট মাসে৷ আগস্টের ৮-১০ অন্বেষণ কুইজ সপ্তাহে, কুইজ বিজয়ী হয়েছিলাম আমি৷ কুইজ বিজয়ী হওয়ার পর দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেল৷ অথচ আজও আমি আমার প্রাপ্য উপহারটি হাতে পেলাম না, জানি না কেন? নাকি আমার দুর্ভাগ্য? নাকি আপনাদের কোনো ভুল? নাকি পোস্ট অফিসের ব্যর্থতা? জানি না এর মধ্যে কোনটি! যাই হোক না কেন আশা করছি আমার ইমেল ঠিকানায় বিষয়টি সম্পর্কে আমায় অবহিত করবেন৷ জানি না আর কোনোদিন ডয়চে ভেলে থেকে কিছু পাবার সুযোগ ঘটবে কিনা আমার৷ যাই হোক ডয়চে ভেলের সাথে ছিলাম, আছি, থাকবো৷ সকলে ভালো থাকবেন৷''
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
বিশ্বের ইতিহাস বদলে দেয়া আন্দোলন
২৫ বছর আগে পূর্ব জার্মানির লাইপশিস শহরে শান্তিপূর্ণ মিছিলের মধ্য দিয়ে এক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যে মিছিলে অংশ নিয়েছিলো ৭০,০০০ মানুষ৷ সেই মিছিলের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল অন্যান্য শহরেও৷ ভেঙে গিয়েছিল বার্লিন প্রাচীর৷ বিশ্বের ইতিহাসে জন্ম নিয়েছিল এক নতুন ইতিহাস৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
‘চেক পয়েন্ট চার্লি’
বার্লিন প্রাচীর ঘেঁষে ছিল এই সীমান্ত পাহারা কেন্দ্রটি, যেটা চেক পয়েন্ট চার্লি নামেই পরিচিত ছিল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্র বাহিনীর সেনা এবং কূটনীতিকরা যাতায়াত করতেন এই রাস্তা দিয়ে৷ রাস্তাটি ছিলো ১৯৬১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত৷ বর্তমানে এই ঐতিহাসিক জায়গায় একটি মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
এখন তাঁরা সবাই এক জনগোষ্ঠী
যে প্রাচীর টপকাতে গেলেই মৃত্যুর ভয় ছিলো সে প্রাচীর খুলে দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরই সমস্ত ভয় কেটে যায় জার্মান জনগণের৷ প্রাচীরের সামনে পেছনে, ওপরে, সব জায়গায়ই যেন আনন্দের বন্যা বইছিল৷ এখন পূর্ব আর পশ্চিমের মানুষ বলে কিছু নেই, এখন তাঁরা সবাই এক জনগোষ্ঠী৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ
নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে প্রতিবাদ আন্দোলন পোঁছে পূর্ব জার্মানির রাজধানী পূর্ব বার্লিনে৷ হাজার হাজার মানুষ সংস্কার ও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে৷ তবে তাঁদের লক্ষ্য ছিলো, এসময় যেন কোনো হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে৷ এটা ছিলো পূর্ব জার্মানি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
বিরোধীরা আরো সক্রিয় হয়
পূর্ব বার্লিনের আলেকজান্ডার প্লাৎসে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভটি সরাসরি টিভিতে সম্প্রচার করা হয়৷ বিক্ষোভকারীরা ভ্রমণ ও সমাবেশ অনুষ্ঠানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানায় সেখানে৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
স্বপ্ন যখন সত্য হয়
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর রাতে অনেক স্মরণীয় ঘটনা ঘটে৷ মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব জার্মানির শত শত নাগরিক হেঁটে, সাইকেলে এবং ট্রামান গাড়িতে করে পশ্চিম বার্লিনে প্রবেশ করে৷ সেদিন চেক পয়েন্ট চার্লি বা সীমান্ত পাহাড়া কেন্দ্রে মানুষ আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে, ঠিক যেন কোলনের কার্নিভালের মতো৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
বার্লিন প্রাচীরের আসল টুকরো
ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজনীতিকদের লক্ষ্য ছিলো ১৯৬১ সালে বার্লিন প্রাচীর তৈরির সময়কার কিছু ইটের নমুনা যেন বন শহরের ইতিহাস বিষয়ক মিউজিয়ামে স্থান পায়৷ আজ সেই স্মৃতিচিহ্ন মিউজিয়াম দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বরের রাতে ডয়চে ভেলের বিভিন্ন ভাষা বিভাগের কর্মীরা সরাসরি সম্প্রচার করার জন্য ‘ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সমিটার’ নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ডুডারস্টাট শহরের সীমান্তে৷ সে দলের সঙ্গী হয়ে ছিলাম আমিও৷ পূর্বের মানুষেরা এত বছর পর কীভাবে মিলিত হচ্ছেন পশ্চিমের মানুষদের সঙ্গে সেটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার৷ সবার চোখে ছিল জল আর ঠোঁটে হাসি৷ স্বচক্ষে দেখা এ ঘটনা কোনোদিনই ভোলার নয়!
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
কলকাতায় উদযাপন
বার্লিনের প্রাচীর পতনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জার্মান কনসুলেটের উদ্যোগে কলকাতায় নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে৷ এর মধ্যে আন্তর্জাতিক গ্রাফিতি ও হিপ হপ কর্মশালা উল্লেখযোগ্য৷ ছবির এই দেয়ালচিত্রটি কলকাতা থেকেই পাঠানো৷
-
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
কূটনীতিকদের বাগানে রিফিউজি ক্যাম্প
১৯৮৯ সালের গ্রীষ্মে সাবেক পূর্ব জার্মানির জনগণের কাছে এই জায়গাটি খুবই জনপ্রিয় ছিলো৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
-ভাই মনোজিৎ, জানতে পারলাম আমাদের পাঠানো পুরস্কার আপনার হাতে পৌঁছেনি৷ আপনার মনের অবস্থা আমরা ভালোভাবেই বুঝতে পারছি৷ কিন্তু কি করবো বলুন ? আপনার পুরস্কার কিন্তু অনেক আগেই পাঠানো হয়েছে৷
এবারের ইমেলের বিষয় পুরোপুরি ভিন্ন৷ নতুন দিল্লি থেকে পাঠক সুভাষ চক্রবর্তী পাঠিয়েছেন ইমেলটি৷ তাঁর বক্তব্য এরকম, ‘‘১৯৬১ সালের আগস্ট থেকে ১৯৮৯ এর নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে পূর্ব আর পশ্চিম বার্লিনকে পৃথক করা ১৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৩.৬ মিটার উঁচু প্রাচীর পতনের ২৫ বর্ষপূর্তিকে স্মরণ করে করা ছবিঘরটি বেশ ভালো লাগলো৷ আমার দুই দুই বার দেখা বার্লিনের বর্নাউআর স্ট্রাসের মেমোরিয়াল সাইটে প্রদর্শিত প্রাচীর টপকাতে গিয়ে নিহত মানুষ ও শিশুদের ফটো আজও আমার মনকে গভীর ভাবে ব্যথাতুর করে তোলে৷''
-লেখার জন্য ধন্যবাদ৷ সবার জন্য রইলো শুভেচ্ছা৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক