আমাদের ফেসবুক বন্ধু বরুণ দেবনাথ লিখেছেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁস করায় যে সরকারের একটি মহল যুক্ত, এটা বলার প্রয়োজন রাখে না এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ না থাকায় এদের বিচার মাঝ পথেই থেমে যায়, যা পরবর্তিতে আবারো প্রশ্ন ফাঁস করতে সাহায্য করে৷''
‘‘প্রত্যেক দলেই একটা কুচক্রিমহল থাকে, তেমনি সরকারের একটা কুচক্রিমহল এতে জড়িত এবং এতে সন্দেহ থাকার কথা নয়৷'' এই মন্তব্য মো. সালাউদ্দিনের৷
সাহাবউদ্দিন আহমেদ আলাল ফেসবুকে আমাদের জানিয়েছেন, ‘‘এটাই বর্তমান সরকারের স্বপ্ন, যাতে এই রাজ্যে যার যা ইচ্ছা তাই করতে পারে৷''
প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারের সরকারের হাত রয়েছে আর এ ব্যাপারে ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু সুজন দাস এতটাই নিশ্চিত যে, তাঁর পাল্টা প্রশ্ন – ‘‘এটা জিজ্ঞাসা করার কি আছে ?''
জাকির হোসেন বলছেন, ‘‘সরকারে একগুঁয়ে মনোভাব তাই প্রমাণ করে৷''
বন্ধু ইব্রাহিমের মতে, বিষয়টি শতকরা ১০০ ভাগই সরকারের হাত রয়েছে৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
৫০ জন সেরা শিক্ষার্থী
জার্মানির মিউনিখ শহরের কেন্দ্রস্থলে বাভেরিয়ার রাজ্যসভা ভবনে ৫০ জন সেরা শিক্ষার্থী বিলাসবহুল জীবনযাত্রার সুযোগ পাচ্ছেন৷ এঁদের মধ্যে এই দু’জন ভাগ্যবান শিক্ষার্থীও রয়েছেন৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
বিশাল প্রাসাদ
বিশাল প্রাসাদের লোহার গেট দিয়ে ঢুকছেন কালো ব্রিফকেস বগলে নিয়ে স্যুট পরা কোনো এক রাজনীতিবিদ৷ তাঁর গাড়ির পাশেই সাইকেল দাঁড় করিয়ে মাথায় বেসবল ক্যাপ পরে কোনো একজন ছাত্র প্রাসাদের ঐ একই গেট দিয়ে ঢুকছেন নিজের থাকার ঘরে৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
রাজকীয় ব্যাপার
প্রাসাদের ঝকঝকে মেঝেতে লাল কার্পেট, দেয়ালে সব বড় বড় পেইনটিং আর লম্বা করিডোর পেরিয়ে ছাত্রদের যেতে হয় নিজেদের ঘরে৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
দ্বিতীয় রাজা মাক্সিমিলিয়ন
১৮৫২ সালে বাভেরিয়ার দ্বিতীয় রাজা মাক্সিমিলিয়ন ছাত্রদের জন্য একটি ফাউন্ডেশন গঠন করেন৷ তাঁর লক্ষ্য ছিল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া৷ ছাত্ররা বাবা-মায়ের আর্থিক সাহায্য ছাড়া এবং পড়াশোনার পাশাপাশি টাকা রোজগারের কোনো চিন্তা না করে পুরো মনোযোগ যেন লেখাপড়ায় খরচ করতে পারে৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
‘এক্সক্লুসিভ’ ছাত্রদের হোস্টেল
এই লক্ষ্য নিয়েই দ্বিতীয় রাজা মাক্সিমিলিয়ন সেরা ছাত্রদের জন্য এই বৃত্তির সুযোগ করে দেন৷ এটা জার্মানির ‘এক্সক্লুসিভ’ ছাত্রদের হোস্টেল৷ ছাত্র আন্দ্রেয়াস বলেন, ‘‘কারো প্রতিভা থাকলে এখানে তারা তাদের সে চাহিদা পূরণের সুযোগ পায়৷’’
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
বৃত্তি পাওয়ার প্রধান শর্ত
সংসদ সদস্যদের পাশে থেকে নিজেদের যোগ্য মানুষ হিসেবে তৈরি করার সুযোগ পাওয়ার জন্য এই ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ পাওয়া একেবারে সহজ ব্যাপার নয়৷ ‘‘এখানে বৃত্তি পাওয়ার প্রধান শর্ত, আবিট্যুর, অর্থাৎ স্কুল ফাইনালের ফলাফল হতে হবে ১,০ গ্রেড এবং নিজ স্কুল থেকে সুপারিশ করা চিঠি৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
চেয়ারম্যান হান্সপেটার বাইসার
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছেও ছাত্রদের প্রমাণ করতে হয় যে, তাঁরা শুধু স্কুলে মেধাবী ছাত্রই নন, তাঁরা অন্য ছাত্রদের চেয়ে ব্যক্তিত্ব সম্পন্নও৷ এছাড়া, থাকতে হবে সামাজিক সচেতনতাবোধ এবং বিভিন্ন কর্মতৎপরতায় নিয়োজিত করার মানসিকতা’, বলেন এই ছাত্রাবাস কমিটির সম্মানিক চেয়ারম্যান হান্সপেটার বাইসার৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
বিশাল ডাইনিং হল
হান্সপেটার বাইসার নিজেও একসময় এই বৃত্তি পেয়ে এই হোস্টেলেই ছিলেন৷ তিনি প্রতিদিন ঠিক দুপুর একটায় প্রাসাদের বিশাল ডাইনিং হলে বসার পর, ছাত্ররা যাঁর যাঁর আসন নেন৷ সবাইকে যে প্রতিদিন খাবার টেবিলে হাজির হতে হবে, তেমন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই৷ প্রতিবছরই কয়েকজন করে নতুন ছাত্রকে এই বিশেষ ছাত্রাবাসে থাকার জন্য বৃত্তির সুযোগ দেওয়া হয়৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
লোভনীয় লাইব্রেরি
ছাত্রী ইভা মনে করেন, ছাত্রাবস্থায় এমন রাজকীয়ভাবে থাকা খাওয়া বা জীবনযাপন অনেকের কাছেই স্বপ্নের মতো৷ তিনি আরো বলেন, পরীক্ষার আগে বেশিরভাগ সময়ই লাইব্রেরিতে কাটে, এখানেই অন্যদের সাথে আলোচনা হয়৷
-
সেরা শিক্ষার্থীদের রাজ্যসভা ভবনে থাকার সুযোগ
মিউনিখের ম্যাক্সমিলেনিউম স্ট্রিট
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব যেমন ফ্রান্স ইয়োসেফ স্ট্রাউস, যিনি দীর্ঘদিন বাভারিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তিনি এবং পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ী ভ্যার্নার হাইসেনব্যার্গ-ও এই বিশেষ ধরণের বৃত্তি পেয়ে ছাত্রাবস্থায় এই বিলাসবহুল হোস্টেলে থাকতেন৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায়, বাংলাদেশ কি মেধাহীন সমাজের দিকে এগুচ্ছে? পাঠক আমিনের উত্তর – ‘‘মেধাহীনের দেখছেন কী? আরও কত দেখবেন মেধা শূন্য!!!''
নজরুল ইসলাম, রতন কুমার রায়, মনির হোসেন, হারুন রশীদ, মুস্তফা কামাল, সজিব খান, শরীফুল ইসলাম সানি, ফারজানা ইতি, সুমন, মফিজ উদ্দিন, গোলাম সারোয়ার, মো. মমতাজ আলী, সামসুল হক, আমিনুল হকসহ অনেকেই টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সাথে একমত যে, ‘‘প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে সরকারের একটি মহল যুক্ত৷''
অন্যদিকে আক্তার হোসেন পাটওয়ারী সুচিন্তিত মত, ‘‘একাত্তুরে বুদ্ধিজীবী নিধন করা হয়েছে৷ আর এখন সর্বক্ষেত্রে বুদ্ধিহীনরা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে৷ প্রকল্প একটিই, কেবল বাস্তবায়নে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে মাত্র৷''
ইমরান খান ডিডাব্লিউ-র কাছে এই বিষয়টি নিয়ে বেশি বেশি লেখালেখির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন৷ বলেছেন, ‘‘প্লিজ, এই বিষয়টাতে একটু শক্তভাবে লেখালেখি করেন, কারণ এইটা এই বাঙালি জাতির ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷''
‘‘এটা ঠিক, তবে এর সংগে কিছু শিক্ষিত চোর জড়িত৷'' – এই মন্তব্য বন্ধু রানা মাসুদের৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ