1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্ভিদ থেকে দামী খনিজ সংগ্রহের উদ্যোগ

১০ আগস্ট ২০২১

হাইটেক প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করতে ‘ফাইটোমাইনিং’ বা উদ্ভিদের প্রয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে গবেষকরা মনে করছেন৷ সস্তায় প্রায় অফুরন্ত সম্পদের নাগাল পেতে অবশ্য আরও গবেষণার প্রয়োজন৷

https://p.dw.com/p/3yn8o
ছবি: Imago/Manfred Ruckszio

বাকহুইট মাটি থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নিয়ে সেখান থেকে রেয়ার আর্থ বেছে নেয়৷ সেই লক্ষ্যে শিকড়ের আশেপাশের অংশ অ্যাসিডিফাই করে, অর্থাৎ অম্লে ভরিয়ে দেয়৷ সেই অ্যাসিডের কারণে ক্যালসিয়াম ভেঙে ফসফরাস ও লোহা আলাদা হয়ে যায়৷ ফসফরাসের মধ্য থেকে রেয়ার আর্থও বেরিয়ে আসে৷ সবকিছু শিকড়ের মাধ্যমে শুষে নিয়ে পাতায় জমা করা হয়৷ কোষের প্রাচীর, মূল কোষ ও ভ্যাকুয়োল নামের বিশেষ পানির আধারে সেটি রাখা হয়৷ 

ফ্রাইব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইটোমাইনিং প্রকল্প এখনো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ তবে অলিভার ভিশে এ ক্ষেত্রে উদ্ভিদের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘আমাদের গ্রহের মাটিতেই এই সব উপাদানের সবচেয়ে বড় ভাণ্ডার রয়েছে৷ কয়েক'শো বছর ধরে আমরা সেই ফসল তুলতে পারি এবং প্রতি বছর গাছপালার মধ্যে একই উপাদান পেতে পারি৷''

তবে রেয়ার আর্থ ও অন্যান্য দামী কাঁচামাল ব্যবহার করতে হলে সবার আগে সেগুলি গাছ থেকে আহরণ করতে হবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োগ্যাস প্রান্টে সেটা করা হচ্ছে৷ ভুট্টা ছোট করে কেটে শুকানো হয়৷ তারপর ওজন করে পানির সঙ্গে তথাকথিত এক চুল্লিতে ভরা হয়৷ সেখানে ব্যাকটিরিয়া দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে৷ একদিকে বায়োগ্যাস উৎপাদিত হয়, অন্যদিকে উদ্ভিদের কোষে ফাটল ধরানো হয়৷ সেখান থেকে যে আর্দ্র পদার্থ বের হয়, তা ওভেনে শুকানো হয়৷ ড. ভিশে বলেন, ‘‘ওভেন থেকে আমরা ডাইজেস্টেট বা গাঁজনের অবশিষ্ট অংশ পাই৷ আমাদের কাছে এটা এক অর্থে উদ্ভিদের আকরিক রূপ৷ তার মধ্যের উপাদানগুলি আমরা ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে চাই৷''

সেই লক্ষ্যে উদ্ভিদের অবশিষ্ট অংশ জ্বালাতে হবে৷ কারণ, মূল্যবান উপাদানগুলি ছাইয়ের মধ্যে পাওয়া যায়৷ ড. অলিভার ভিশে জানালেন, ‘‘গোটা প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে৷ অতি সাধারণ দেখতে সাদা ও রঙিন সুক্ষ্ম গুড়া পাওয়া যায়৷ সেগুলি হলো জার্মেনিয়াম-ডাই-অক্সাইড ও রেয়ার আর্থ লবণ৷ সেগুলি ইলেকট্রিক গাড়ি ও মোবাইল ফোনে কাজে লাগে৷'' 

তেল নিষ্কাশনের সামুদ্রিক মঞ্চ ‘মিটেল প্লাটে’

ফ্রাইব্যার্গের বাগানে ঠিক কত পরিমাণ মূল্যবান কাঁচামাল পাওয়া যাবে, গবেষকরা এখনো তা জানেন না৷ তাঁরা সবে হেক্টর প্রতি প্রায় ৫০ গ্রাম জার্মেনিয়াম ও ৫০ গ্রাম রেয়ার আর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছেন৷ সেই পরিমাণ বেশি না হলেও অলিভার ভিশে ও তাঁর সহকর্মীরা ভবিষ্যতে  যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখছেন৷  ড. ভিশে মনে করেন, ‘‘শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে জার্মানির জন্য প্রচলিত কাঁচামাল আমদানির বিকল্প অত্যন্ত জরুরি৷ সে কারণে আমার মতে এই প্রক্রিয়াকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে হবে৷''

ফাইটোমাইনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদের বিশাল সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো হচ্ছে না৷ কিছু উদ্ভিদ এমনকি মাটি থেকে বিষাক্ত হেভি মেটাল শুষে নিতে পারে৷ আরও এমন ‘সুপার প্লান্ট' আবিষ্কার করার বিষয়ে গবেষকরা নিশ্চিত৷

স্টেফানি ক্র্যুগার/এসবি