1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কম চর্বির খাবার খাওয়া নিয়ে নতুন পরামর্শ

৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

১৯৪৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে করা এক গবেষণায় জানা গিয়েছিল, শরীরের অত্যধিক ওজন হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ৷ সেই সময় মার্কিনিদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল হার্ট অ্যাটাক৷

https://p.dw.com/p/3p3pU
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তচাপ ওঠা-নামার উপর কোলেস্টেরলের তেমন প্রভাব নেই৷
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তচাপ ওঠা-নামার উপর কোলেস্টেরলের তেমন প্রভাব নেই৷ছবি: Imago/Science Photo Library

তাই ওজন কমাতে কম চর্বির খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু এখন সেই পরামর্শ থেকে সরে এসেছেন বিজ্ঞানীরা৷ তারা এবার নতুন পরামর্শ দিচ্ছেন৷

সসেজ, মেয়োনিজ কিংবা মাখন - এমন চর্বিযুক্ত খাবার শরীরে মেদ বাড়ায় ও শরীরকে অসুস্থ করে তোলে৷ কিন্তু প্রথম কবে আমাদের মধ্যে এমন ভয় ঢোকে?

সেই ১৯৪৮ সালে৷ সেই সময় মার্কিনিদের মৃত্যুর প্রধান কারণ যে হার্ট অ্যাটাক, সেটা কী কারণে হয়, তা জানতে একটি গবেষণা শুরু হয়েছিল৷ প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন নাগরিক ঐ গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন৷

নয় বছর পর প্রথম ফল পাওয়া যায়৷ উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও শরীরের অত্যধিক ওজন হার্ট অ্যাটাকের কারণ বলে জানা যায়৷

শরীরের ওজন বাড়ার কারণ: অনেক বেশি খাওয়া এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ৷

চর্বিযুক্ত খাবার জার্মানিতেও একটি সমস্যা হয়ে উঠেছিল৷ অনেক বেশি মানুষ হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছিল৷ এর জন্য দুর্বল হৃদপিন্ডে চর্বির প্রভাবকে দায়ী করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল৷     

যুক্তরাষ্ট্রে বিষয়টি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছিল৷ ১৯৮০ সালে সেনেটর জর্জ ম্যাকগভর্ন ‘জাতীয় খাদ্যাভ্যাস লক্ষ্যমাত্রা' ঘোষণা করেছিলেন৷

চর্বি ও হার্ট অ্যাটাক নিয়ে নতুন গবেষণা

মার্কিনিদের কী খাওয়া উচিত, সে বিষয়ে প্রথমবারের মতো একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছিল৷ এতে চর্বিযুক্ত খাবার ও খারাপ কোলেস্টেরল থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছিল৷ এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের বিরুদ্ধে লড়তে নিয়মিত অনুশীলন করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল৷

কিন্তু নিয়মিত অনুশীলন কিংবা কম চর্বিযুক্ত খাবার, কোনোটাই মার্কিনি ও জার্মানদের ওজন কমাতে সহায়ক হয়নি৷ বরং উলটোটা হয়েছে, বেড়েছে৷

হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যরক্ষা নিয়ে কাজ করা মার্কিন এক সংস্থাও কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিল৷

সেই সময় শুধুমাত্র মার্কিন কার্ডিওলজিস্ট ডা. রবার্ট অ্যাটকিনস এর বিরোধিতা করেছিলেন৷ তিনি উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারের পক্ষে ছিলেন৷

চলতি শতকের শুরুতে প্রথমবারের মতো কম চর্বির খাবার দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হয়৷

২০০১ সালে বিখ্যাত কখরেন ইন্সটিটিউট কম চর্বির খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আগের করা সব গবেষণা আবার যাচাই করার উদ্যোগ নেয়৷ ফলাফল- কম চর্বির খাবার আয়ু বাড়ায়, এমন প্রমাণ তেমন নেই৷

পাঁচ বছর পর চূড়ান্ত প্রমাণ পাওয়া যায়৷ প্রায় ৫০ হাজার নারীর উপর জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, যারা কম চর্বির খাবার খেয়েছেন তাদের হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের ঝুঁকি, যারা খাননি, তাদের চেয়ে কমেনি৷

তাই প্রায় ৩০ বছর পর চর্বিযুক্ত খাবারের পক্ষে কিছুটা মত দেখা যায়৷ তখন থেকে ভালো চর্বি আর খারাপ চর্বির পার্থক্য করা শুরু হয়৷ যেমন ভেজিটেবল তেল৷

যুক্তরাষ্ট্রের এখনকার খাদ্যাভ্যাস নীতিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর কোলেস্টেরল, অর্থাৎ খারাপ চর্বির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে৷         

তবে এর মধ্যে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তচাপ ওঠা-নামার উপর কোলেস্টেরলের তেমন প্রভাব নেই

বর্তমানে গবেষকরা এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, সুস্বাস্থ্যের জন্য কয়েক দশক ধরে কম চর্বির খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, যদিও তার পক্ষে কখনোই কোনো প্রমাণ ছিল না৷

তারপরও এখনও কম চর্বির খাবার পাওয়া যাচ্ছে৷ কারণ খাদ্য উৎপাদনকারীরা বিভিন্ন গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না৷

কাটরিন ক্রিফ্ট, সোনিয়া কোলোনকো/জেডএইচ