1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসলাম ধর্মের উৎসবে জার্মানিতে ছুটি অনুমোদন হবে কি?

১৫ অক্টোবর ২০১৭

জার্মানির মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে ইসলাম ধর্মের উৎসব বা বিশেষ দিনগুলোতে ছুটির প্রস্তাব তুলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ যদিও এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে কট্টর ডানপন্থি দল এএফডি৷

https://p.dw.com/p/2lr6d
Berlin Moschee
ছবি: Getty Images/T. Schwarz

মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের দিনগুলোতে ছুটির প্রস্তাব বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত মনে হলেও দেশের কয়েকটি রাজ্যে এ ব্যবস্থা আগে থেকেই বহাল রয়েছে৷ ‘‘একটি দেশের যেসব জায়গায় মুসলমানদের সংখ্যা বেশি, সেখানে তাদের ধর্মীয় উৎসবে ছুটি দেয়া যেতেই পারে, তাই নয় কি!'' এমনটাই প্রস্তাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমিজিয়ের-এর৷ তবে তাঁর এই প্রস্তাবে আবারও বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে নিজের দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন বা সিডিইউ-এর রাজনীতিবিদদের মধ্যেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে৷ কেননা এবারের নির্বাচনে দলটির ভোট হারানোর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে মুসলিমদের প্রতি সদয় ভাবকেই দায়ী করা হচ্ছে, যা তাদের রক্ষণশীল ভাবধারার একেবারে বিপরীত৷ তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে যে যুক্তি তুলে ধরেছেন তা অগ্রাহ্য করার কোনো কারণ নেই৷ তিনি বলেছেন, ‘‘১লা নভেম্বর ‘অল সোল'স ডে' বা সর্ব আত্মা দিবস পালন করা হয় মৃত ব্যক্তিদের স্মরণে, এটা কেবল সেসব অঞ্চলেই হয় যেখানে ক্যাথলিকরা বাস করেন৷''

Deutschland Vorstellung des Verfassungsschutzberichts 2016
‘‘দেশের যেসব জায়গায় মুসলমানদের সংখ্যা বেশি, সেখানে তাদের ধর্মীয় উৎসবে ছুটি দেয়া যেতেই পারে’ছবি: Reuters/A. Schmidt


এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া:

লোয়ার স্যাক্সনিতে সিডিইউ দলের চেয়ারম্যান বার্নড আলথুসমান এই প্রস্তাব অনুমোদনের বিপক্ষে মত দিয়েছে৷ তিনি বললেন, ‘‘জার্মানিতে বিভিন্ন দিবসে ছুটি দেয়াটা দীর্ঘদিনের প্রথা৷ কিন্তু সেটা নির্দিষ্টি কয়েকটি দিনের, যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে৷ তাই এটা পরিবর্তনের আমি কোনো দরকার দেখছি না৷''

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও এরইমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাব নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে৷ জার্মানির কট্টর ডানপন্থি দল এএফডি-র শীর্ষ রাজনীতিবিদ বেট্রিক্স ফন স্ট্রর্চ টুইটে লিখেছেন, ‘‘না! না! না! মুসলিমদের ছুটির দিন বিবেচনা করার আগেই দেশে ছুটির দিনগুলো নিয়ে একটি আইন করার আহ্বান জানানো হোক৷''

মুসলামদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল এই প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে৷ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আয়মান মাজিক বলেছে, ‘‘এ ধরনের উৎসবের দিনকে স্বীকৃতি দিলে তা বিভিন্ন ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতি বাড়াতে সহায়ক হবে৷ কেননা রমজানের শেষে একজন মুসলিম পুলিশ কর্মকর্তা যখন ঈদের দিন ছুটি চাইবেন, সেদিন যেন খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী তাঁর সহকর্মী উপলব্ধি করতে পারেন যে বড়দিন বা ক্রিসমাসের সময় তাঁরা যে কারণে ছুটি পান, সে কারণেই এই ছুটিটা তাঁকে দেয়া হচ্ছে৷ এই ছুটির অনুমোদন হলে প্রত্যেকটি ধর্মের মানুষের মধ্যে এই বোধটা জন্মাবে৷''



রাজ্যভিত্তিক ছুটির দিন:

জার্মানিতে কয়েকটি রাজ্যেমুসলমানদের উৎসবের দিনগুলোতে ছুটি এরই মধ্যে প্রচলন হয়েছে৷ বার্লিন, হামবুর্গ এবং ব্রেমেনে মুসলিম শিক্ষার্থীরা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব বা বিশেষ ধর্মীয় দিনগুলোতে ছুটি নিতে পারেন৷ আর যারা বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন তাদের সুযোগ রয়েছে, কাজ চলাকালীন মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার৷ বিশেষ করে বার্লিনে রমজান এবং ঈদ উল-আজহায় মুসলমানদের এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে৷

জার্মানিতে ছুটির দিনগুলো এক এক রাজ্যে এক একদিন৷ বিশেষ কিছু ছুটি আছে যেগুলো কেবল কয়েকটি রাজ্যের জন্য প্রযোজ্য৷ পুরো দেশে ন'টি সরকারি ছুটির দিন রয়েছে৷ তবে কেবল ৩রা অক্টোবর পুনরেকত্রীকরণ দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়৷


ফলকার ভাগেনার/এপিবি
দেবারতি গুহ

এ বিষয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷