1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে দাম কমে, বাংলাদেশে বাড়ে

২ এপ্রিল ২০২১

সামনেই রোজা৷ বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবেই৷ যে কোনো উৎসবের আগে জিনিসপত্রের দাম বাড়াটাই যেন স্বাভাবিক বাংলাদেশে৷ অথচ জার্মানিতে বিশেষ দিনগুলোকে উপলক্ষ্য করে বিশেষ মূল্যছাড়ের কারণে দোকানগুলোতে থাকে ভিড়!

https://p.dw.com/p/3rX3U
Bangladesch Iftar Mahlzeit Dhaka Markt
ছবি: DW/M. Mamun

সব দেশেই বিশেষ উৎসবগুলোকে ঘিরে থাকে মানুষের কিছু সুন্দর পরিকল্পনা৷ হোক তা রোজা, পূজা, ঈদ, পহেলা বৈশাখ, বড়দিন, ইস্টার বা অন্য কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক উৎসব৷ উৎসব মানেই আনন্দ আর এই আনন্দকে পরিপূর্ণতা দেয় কেনাকাটা৷ তবে প্রতিবছরই লক্ষ্য করি, রোজা আসার সাথে সাথেই বাংলাদেশে কিছু খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বেড়ে যায়৷ বিশেষ করে পেঁয়াজ, ডাল, বেগুন, ছোলা, তেল, চিনি, খেজুরসহ ইফতারের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসের দাম এই সময়ে খুব চড়া থাকে৷ আর প্রতিবছরই দ্রব্যমূল্য বাড়বে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয় দেশের সরকারের পক্ষ থেকে, বলা হয় চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট খাবার মজুদ আছে, ইত্যাদি ইত্যাদি৷ কিন্তু বাস্তবে কী ঘটে?

মজার ব্যাপার হলো, সপ্তাহ দুই আগে একটি অনলাইন পত্রিকায় দেখেছি, এখন নাকি অনেক ব্যবসায়ী রোজার মাস শুরুর এক দেড়মাস আগে থেকেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন, যাতে ক্রেতারা মনে করেন, রোজার আগেই দাম বেড়েছে, রোজার জন্য নয়!  অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা সরকারকেও বলতে পারেন, সরকারের দেওয়া দাম না বাড়ানোর  অনুরোধ তারা রক্ষা করেছেন৷ যা-ই হোক, রোজা শুরুর আগেই খাদ্যদব্যের মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল হতে পারে বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী৷ তার মতে, সুযোগ পেলে তো ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নেবেনই৷ তাই তিনি অতিরিক্ত কেনাকাটা না করে কেনাকাটা স্বাভাবিক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন৷ ব্যবসায়ীদের আগলে রেখে সংযমের মাসে এ কেমন পরামর্শ আমার বোধগম্য নয়! শুধু রোজা নয় ঈদ, পূজা, পহেলা বৈশাখের মতো সব উৎসবেই বাংলাদেশে অনেক জিনিসেরই মূল্য থাকে আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের প্রায় নাগালের বাইরে৷

অথচ উৎসবের আগে ইউরোপ-অ্যামেরিকাসহ প্রায় সারা বিশ্বেই থাকে জিনিসপত্রে বিশেষ মূল্যছাড়! জার্মানিতে বড়দিনের আগে জামা-জুতো থেকে শুরু করে ঘরের ফার্নিচারে পর্যন্ত মূল্যছাড় দেওয়া হয়৷ আমি দেখেছি, অনেকে তো বড়দিনের আগে মূল্যছাড়ের সুযোগ নিয়ে নতুন করে ঘর সাজানোর জন্য সারা বছর অপেক্ষাই করে থাকে৷ বড়দিন উপলক্ষে উপহার দেয়ার মতো কিছু বিশেষ জিনিস বাজারে আসে যা সাধারণত অন্য সময় পাওয়া যায় না৷ অনেকেই সেসব জিনিস কেনার অপেক্ষায় থাকে আর মূল্যছাড় দেওয়ার ফলে একটির জায়গায় তিনটিও কেনা সম্ভব হয়৷ প্রবাসীদের অনেকেই দেশে আপনজনদের উপহার দেওয়ার জন্য সেসময় আগ্রহ নিয়ে কেনাকাটা করে রাখেন৷

Nurunnahar Sattar, DW-Mitarbeiterin Bengali Programm
নুরুননাহার সাত্তার, ডয়চে ভেলেছবি: DW/A. Islam

তাছাড়া ইস্টার, কার্নিভাল বা অন্যান্য উৎসবেও থাকে কিছু জিনিসে মূল্যছাড়৷ উৎসবের আগে তো বিশেষ সেল থাকেই এদেশে৷ এছাড়াও কিছু দোকানে উৎসবের পরের দিন, বিশেষ করে কিছু খাবার বা চকলেটের মূল্য অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হয়৷ অর্ধেক মূল্যে দামি চকলেট পেতে অনেকেই তখন দোকানে ভিড় জমায়৷ বড়দিন বা ইস্টারের জন্য তৈরি চকলেট শুধু মজার নয়, চকলেটের প্যাকেটগুলোও হয় খরগোশ, হাঁস, মুরগি, ডিমের নানারকম ডিজাইন করা, দারুণ আকর্ষণীয়৷ এরকম উপহার দিতে যেমন আনন্দ, পেতেও ঠিক তেমনটাই৷ তবে দাম কমানোর কারণেই কেবল সকল নাগরিকের পক্ষে লোভনীয় দামি চকলেটগুলো কেনা সম্ভব হয়ে থাকে৷ এক কথায় বলা যায়, জিনিসপত্রের দাম কমানোর ফলে এখানে সব উৎসবই  হয়ে ওঠে ধনী-গরিব সকলের৷ যদিও বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে  সরকারের নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো দরকারই পড়ে না৷

এবার সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্যে করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, জার্মানিও তার ব্যতিক্রম নয়৷ জার্মানিতেও কিছু জিনিসের দাম সামান্য বেড়েছে বটে, কিন্তু অভিযোগ করার মতো নয়!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য