1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজসাইপ্রাস

নর্থ সাইপ্রাসে ৮০ লাখ টাকায় দোকান খুলেছেন বাংলাদেশি তরুণ

২৬ জুন ২০২২

কথায় বলে, বাঙালি কোথায় নেই? বাস্তবেও দেখা গেল ঠিক তাই৷ সাইপ্রাসের বিভক্ত রাজধানী নিকোসিয়ার দুই অংশ৷ তুরস্ক অধ্যুষিত নর্থ সাইপ্রাসের নর্থ নিকোসিয়ায় রয়েছে বাংলা বাজার নামে বড়সড় হোলসেল দোকান৷

https://p.dw.com/p/4DFt9
টার্কিশ রিপাবলিক অফ নর্দার্ন সাইপ্রাসের (টিআরএনসি) একমাত্র বাংলা দোকানের মালিক ইমাম হোসেন (বাঁ দিক থেকে প্রথমে)৷ ইমাম এবং অন্যদের সঙ্গে কথা বলছেন ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম৷ ছবি: অনুপম দেব কানুনজ্ঞ
টার্কিশ রিপাবলিক অফ নর্দার্ন সাইপ্রাসের (টিআরএনসি) একমাত্র বাংলা দোকানের মালিক ইমাম হোসেন (বাঁ দিক থেকে প্রথমে)৷ ইমাম এবং অন্যদের সঙ্গে কথা বলছেন ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম৷ ছবি: অনুপম দেব কানুনজ্ঞছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW

 চানাচুর, ছোলার ডাল, বিরিয়ানির মশলা, সর্ষের তেল, লুঙ্গি কিংবা গামছা–এ যেন বাংলাদেশের এক টুকরো অংশ৷ এই দোকানে মেলে সবকিছু৷ টোস্ট থেকে নোনতা বিস্কুট এমনকি মুড়িও মেলে ‘বাংলা বাজার’ নামে এই বাংলাদেশি দোকানে৷ টার্কিশ রিপাবলিক অফ নর্দার্ন সাইপ্রাসের  (টিআরএনসি) একমাত্র বাংলা দোকানের মালিক ইমাম হোসেন৷ বাংলাদেশি এই তরুণ এই দোকানের মালিক৷ 

ইমাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এখানে একমাত্র বাংলাদেশি দোকান এটি৷ আমি একমাত্র ইমপোর্টার৷ গোটা নর্থ সাইপ্রাসে জিনিস সেল করি৷ স্থানীয় টার্কিশ দোকানেও বিক্রি করি৷ ’’

কবে শুরু দোকান?

চার বছর আগে নর্থ সাইপ্রাসের বাফরা শহরে ব্যবসা শুরু করেন ইমাম৷ সেটি ছিল স্থানীয় দোকান৷ সেখানে করোনার সময় ক্ষতির মুখে পড়েছিল ব্যবসা৷ তখন তিনি বাংলাদেশেরই এক বন্ধুর পরামর্শ নিয়ে দেশ থেকে পণ্য আমদানি করা শুরু করেন৷ 

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আনুমানিক ৮০ লাখ টাকা দিয়ে নিজের নামে কোম্পানি খুলেছি৷ এ দেশের নাগরিকত্ব পেলে সরকার সে টাকা ফেরত দিয়ে দেবে৷ নিজের নামে কোম্পানি হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে যে কোনো কিছু আনার সুবিধা রয়েছে৷ দুনিয়ার যে কোনো দেশ থেকে পণ্য আনতে পারি৷ নেদারল্যান্ডস থেকে ফ্রোজেন ইলিশ আনার চেষ্টা করছি এখানকার বাঙালিদের জন্য৷’’

ক্রেতা নাজমা রহমান বলেন, ‘‘জুস, বাংলাদেশি চানাচুর, মরিচ সব এখানে পাই৷ বাংলা খাবার পেতে এখানে আসি৷’’ আট বছর ধরে সপরিবারে নর্থ নিকোসিয়ায় রয়েছেন তিনি৷পরিবারের অনেক সদস্যই এখানে থাকেন৷ তারাও এই দোকানে আসেন কেউ কেউ৷ এই দোকান থাকায় দেশি জিনিসপত্রও হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন নাজমার মতো আরো অনেকে৷

নর্থ নিকোসিয়ায় বাংলাদেশের জিনিসের দাম কেমন, প্রশ্নের উত্তরে নাজমা বলেন, ‘‘দেশের তুলনায় দাম সামান্য একটু বেশি৷ কিন্তু অনেক কিছুই এখানে পাওয়া যায়৷ খুব সুবিধা হয়৷’’

অপর এক বাংলাদেশি ক্রেতা ইসমাইল ভুঁইয়াও এসেছিলেন এই দোকানে৷ তিনিও দীর্ঘদিন নর্থ নিকোসিয়ায় রয়েছেন৷ তিনি জানান, ‘‘এই দোকানে কেনাকাটি করি৷ প্রয়োজন পড়লে এখানে আসি৷ বাংলাদেশি দোকান হওয়ায় অনেক পণ্য সহজলভ্য হয়েছে৷ আগে যেটা স্বপ্ন এবং কঠিন ছিল৷ বাংলাদেশের সব জিনিসই এখানে সহজলভ্য৷ শহরের বাঙালিরা সহজেই এগুলি কিনতে পারছি৷  দূরে যারা থাকেন, তাদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে৷ দোকানের মালিককে বললে তিনি সেগুলি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন৷ এই দোকান থাকায় খুব উপকার হচ্ছে৷’’ শহরে আরো বাংলাদেশি দোকান থাকা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷

কূটনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের সঙ্গে সে অর্থে নেই টিআরএনসির৷ সে ক্ষেত্রে পণ্য কীভাবে আসে দোকানে?

এই প্রসঙ্গে ইমাম জানান, জিনিসগুলি প্রথমে নমুনা দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য বিভাগেপাঠানো হয়৷ যাচাই করা হয়৷ তুরস্কের মেরসিন বন্দর থেকে তারপর টিআরএনসি-তে আসে৷ ফামাগুস্তা দিয়েও আসে৷

ইমামের কথায়, ‘‘প্রথমে কষ্ট হয়েছিল, অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে কাগজপত্রের জন্য৷ বাধা ইত্যাদি পেরিয়ে সাফল্য এসেছে ব্যবসায়৷ এখানে বসবাসের অভিজ্ঞতাও বেশ ভাল৷ নিরাপত্তা এবং শান্তি রয়েছে৷ চিকিৎসা ব্যবস্থাও এখানে দেশের তুলনায় ভাল৷ পড়াশোনার খরচও দেয় সরকার৷ বিয়ে করেছি, মেয়েও আছে–একাধিক ইনস্যুরেন্সের সুবিধা পাই৷ অনেক কোম্পানি থাকা-খাওয়া ফ্রি-তে দেয়৷ লিরার মান বাড়লে এই দেশ সম্ভাবনার দেশ৷ এই দেশ ইমপোর্ট নির্ভর দেশ৷’’

তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই আরো ব্যবসায়ী বাড়ুক, প্রতিযোগিতা হোক৷’’

সাইপ্রাসের নিষিদ্ধ নগরী