1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বরিস জনসন কি পারবেন?

মাসুম বিল্লাহ
২৩ জুলাই ২০১৯

সফল চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং নড়বড়ে কনজারভেটিভ দলের ভীত শক্ত করাই মূল চ্যালেঞ্জ নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সামনে৷তিনি কি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হবেন, না টেরেসা মে-র পরিণতি বরণ করতে হবে তাকে?

https://p.dw.com/p/3MbDB
Großbritannien London | Boris Johnson wird neuer Premierminister
ছবি: Reuters/T. Melville

কনজারভেটিভ দলের যে ক'জন নেতার ব্যাপক প্রচারণা ও অবস্থানের কারণে ব্রেক্সিটের পক্ষে গিয়েছে গণভোট, তাঁদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন নয়া প্রধানমন্ত্রী জনসন৷ কথার লড়াইয়ে ব্রিটেনে রাজনীতির ময়দান গরম রাখা আর সমালোচনা কুড়ানোর ক্ষেত্রেও যিনি থাকেন সর্বাগ্রে৷

পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সদস্যদের রায় আনতে দুই বছরে চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেছেন টেরেসা মে৷ গণভোটের আগে ব্রেক্সিট-বিরোধিতা করলেও সেই কাজটি করার দায়িত্ব পড়েছিল তাঁর কাঁধে৷

নতুন প্রধানমন্ত্রী জনসনের কড়া ইইউ-বিরোধী মনোভাবের শুরুটা হয়েছিল আশির দশকের শেষে, যখন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনে ডেইলি টেলিগ্রাফের সংবাদদাতা হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি৷ তখন থেকেই এই সংস্থায় যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হতে দেখা যায় তাঁকে৷

সেসময় ইউরোপীয় কমিশনে ব্রিটেনের অবস্থান পোক্ত করার ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে কাজ করেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ‘লৌহমানবী-খ্যাত মার্গারেট থাচ্যার৷ সবার বিরোধী অবস্থানে গিয়ে ইউরোপীয় কমিশনে ব্রিটেনের ফি কমিয়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি৷

ব্রেক্সিটের আলোচনা করতে গিয়ে থ্যাচারের সে সময়কার শক্ত অবস্থানের উদাহরণ টেনে থাকেন জনসন৷ নতুন প্রধানমন্ত্রীর একটি জীবনীতে উঠে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী থ্যাচারের সঙ্গে তাঁর বেশ সখ্যতাও ছিল৷

১৯৭৯ সালে থ্যাচার যখন ব্রিটেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন, তখনও বর্তমান সময়ের মতো বহুধা বিভক্ত ছিল টোরি দল৷ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ব্রিটেনকে টেনে তোলার পাশাপাশি স্নায়ুযুদ্ধকালে বিশ্ব রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন থ্যাচার৷

 

আবার কনজারভেটিভ দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে পদত্যাগে বাধ্য হন ১১ বছর ক্ষমতায় থাকা থ্যাচার৷ নিজ দলের জন মেজরের হাতে ক্ষমতা তুলে বিদায় নেন তিনি৷

জন মেজর সাড়ে ছয় বছর ক্ষমতায় থাকলেও দলের অবস্থান পোক্ত না করে উল্টো খারাপ করেছিলেন৷ তারপর টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় ছিল লেবার পার্টির দখলে৷

দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১০ সালে ডেভিড ক্যামরনের নেতৃত্ব ক্ষমতায় আসে কনজারভেটিভ পার্টি৷ এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসলেও এক বছরের মাথায় বেক্সিটকে কেন্দ্র করে পদ ছাড়তে হয় তাঁকে৷

Masum Billah
মাসুম বিল্লাহ, ডয়চে ভেলেছবি: DW/T. Mehedi

থ্যাচারের বিদায়ের ৩০ বছরের মাথায় ব্রেক্সিট নিয়ে সংকটের মুখে ব্রিটেন৷ ক্যামেরনের পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে এলেন টেরিসা মে, তাঁকেও বিদায় নিতে হয় ব্রেক্সিট সফল না করেই৷

ব্রেক্সিটের কড়া সমর্থক হওয়ার কারণে মে সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে বাছাই করা হয়েছিল জনসনকে৷ কিন্তু ব্রেক্সিটের ধরণ কেমন হবে সেই বিতর্কে পদ ছাড়েন এই টোরি নেতা৷

এলোমেলো সোনালি চুলের বরিস জনসন লন্ডনের সাবেক মেয়র, ব্রিটিশ রাজনীতির এক জনপ্রিয় এবং বর্ণাঢ্য চরিত্র- যার চটকদার কথা এবং বিচিত্র কর্মকান্ড প্রায় সবসময়ই সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়৷

ব্রেক্সিট নিয়ে সফল হতে হলে দলের মধ্যে বিরোধ মেটানোর পাশাপাশি সংসদে বিরোধ দল লেবার পার্টির সমর্থনও খুব দরকার৷ কারণ বর্তমান সংসদে বড় কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই রক্ষণশীলদের৷ আবার টেরিসা মে-এর মতো নতুন প্রধানমন্ত্রী জনসকেও আস্থা ভোটের দিকে নিয়ে যেতে পারে জেরেমি করবিনের দল৷

বিচিত্র চরিত্রের জনসন প্রধানমন্ত্রী হলে পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড ও শিক্ষামন্ত্রী অ্যানে মিলটনসহ কয়েকজন৷ আবার ব্রেক্সিট-বিরোধী অনেকে তাঁর বিপক্ষে একাট্টা৷

রাজনৈতিক জীবনের পুরোটা সময় ব্রেক্সিটের পক্ষে থাকা বরিস জনসন নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কতোটা সফল হবেন- তা এখন দেখা বিষয়৷ বেক্সিটের পাশাপাশি তিনি টোরি দলের ভীত শক্ত করতে পারবেন কিনা, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন৷