1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আইক্লাউডে শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি খুঁজবে অ্যাপল

৬ আগস্ট ২০২১

‘নিউরালহ্য়াশ' প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্লাউডে আপলোড করার সময় গ্রাহকদের বিভিন্ন ছবি স্ক্যান করা সম্ভব হবে৷ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন প্রযুক্তির ফলে বিভিন্ন কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলও সহজ হবে৷

https://p.dw.com/p/3ydTE
শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি আইক্লাউডে আপলোড করার আগেই শনাক্ত করা সম্ভব হবেছবি: picture-alliance/dpa/D. Sabangan

অ্যাপল বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন থেকে আপলোড করা ছবি তল্লাশিতে নতুন এক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে তারা৷ এর ফলে গ্রাহকদের ফোন থেকে শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি আইক্লাউডে আপলোড করার আগেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে৷

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কোনো গ্রাহকের ফোন থেকে এমন ছবি আপলোড করা হচ্ছে জানতে পারলে অ্যাপল নিজেদের কর্মীর মাধ্যমে তা রিভিউ করে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবে৷ তবে প্রযুক্তি ভুলভাবে কাউকে শনাক্ত করতে পারে কি? অ্যাপল বলছে সে সম্ভাবনা এক ট্রিলিয়নের এক ভাগ৷

‘নিউরালহ্যাশ প্রযুক্তি'

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দুটো পরস্পরবিরোধী সংকটের সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে অ্যাপল৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিশু যৌন নির্যাতন বন্ধে সহায়তার অনুরোধ পায় প্রতিষ্ঠানটি৷ অন্যদিকে, গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি অ্যাপল নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক বলে মনে করে৷

নতুন এই প্রযুক্তি উভয় সংকটের সমাধানে ভারসাম্য আনবে বলে মনে করে অ্যাপল৷

এই ‘নিউরালহ্যাশ' প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো ছবি সম্পাদনা বা পরিবর্তন করে আপলোড করার চেষ্টা করা হলে সেটিও শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে  শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত একটি তথ্যভাণ্ডার রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর৷ সেখানে বিভিন্ন ছবিকে হ্যাশ বা কোডে রূপান্তর করা হয়৷ এর ফলে কোনো ছবিকে সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হলেও সে ছবি হুবহু প্রকাশ বা ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না৷

নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে আইফোন আইক্লাউডে আপলোড করা ছবিগুলোকেও হ্য়াশ বা কোডে রূপান্তরিত করা হবে এবং এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যভাণ্ডারের ছবিগুলো মিলিয়ে দেখা হবে৷ একই সঙ্গে কোনো প্রযুক্তির মাধ্যমে ছবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আগে  তাদের কর্মীরা সেগুলো যাচাইবাছাই করবেন৷

অ্যাপলের সার্ভারে আপলোড হওয়ার সময়ই এসব ছবি পরীক্ষা করা হবে৷ অ্যাপল জানিয়েছে, আইফোনে সংরক্ষিত ছবি নয় বরং কেবল আইক্লাউডে আপলোড করার সময়ই ছবি স্ক্যান করা হবে৷

যেসব গ্রাহক মনে করবেন তাদের অ্যাকাউন্ট অযথাযথ উপায়ে বন্ধ করা হয়েছে, তারা আপিল করতে পারবেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন এর প্রধান নির্বাহী জন ক্লার্ক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘নতুন এই নিরাপত্তা পদক্ষেপের মাধ্যমে যেসব শিশুদের অনলাইনে হয়রানি করা হচ্ছে ও ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের ছবি ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, তাদের জীবন বাঁচবে৷''

কর্তৃত্ববাদী সরকারের প্রযুক্তির অপব্যবহারের সুযোগ

অনেক প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকই অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন৷ কিন্তু অনেকে সেগুলোর অপব্যবহারের ঝুঁকিও দেখতে পাচ্ছেন৷

জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিপ্টোগ্রাফি গবেষক ম্যাথিউ গ্রিন দুটো বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ বিরোধী মতের ব্যক্তি বা প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ীর ফোনে প্রযুক্তিকে বোকা বানানোর মতো ভুয়া ছবি পাঠিয়ে হেনস্তা করা সম্ভব হবে৷ অন্যদিকে, এই প্রযুক্তি কী কী করার সুযোগ রেখেছে সেটিও একটি বড় প্রশ্ন বলে মনে করেন গ্রিন৷

তিনি বলেন, ‘‘তখন কী হবে চীনা সরকার যদি বলে, ‘আমরা চাই এই তালিকার ফাইলগুলো তোমরা পরীক্ষা করো'? অ্যাপল কি না করবে? আমি আশা করি তারা না বলবে৷ কিন্তু তাদের প্রযুক্তি না বলবে না৷''

গ্রিন মনে করেন, অ্যাপল একটি ‘সুস্পষ্ট বার্তা' দিয়েছে, আর তা হচ্ছে- ‘‘গ্রাহকদের ফোনে নিষিদ্ধ উপাদান থাকলে তা স্ক্যান করার জন্য একটি ব্যবস্থা তৈরি করলে কোনো সমস্যা হবে না৷''

এডিকে/এসিবি (এপি, রয়টার্স)