1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এমপিদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না কেন?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ নভেম্বর ২০২০

সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত চলছে বহুদিন ধরে৷ কিন্তু দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া তদন্তই শেষ হয় না৷ মামলাও হয়না৷ বিচারতো অনেক দূরের কথা৷ এমন কেন হয়?

https://p.dw.com/p/3lC3g
ছবি: bdnews24.com

দুদক আরো ২০ জন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে৷ আর তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান৷ কুয়েতে মানব পাচারের অভিযোগে আটক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে বুধবার অবৈধ অর্থ উপার্জন ও অর্থপাচারের মামলার পর তিনি আরো ২০ জন সংসদ সদস্যের কথা জানান৷ তবে তাদের নাম প্রকাশ করেননি৷

দুদক সম্প্রতি ৫০ জন সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে৷ তাদের মধ্যে পাপুল ও তার স্ত্রীসহ ২২ জনের সম্পদের তথ্য পেয়েছে৷ এর মথ্যে সাত জনের বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্যও এসেছে দুদকের কাছে৷

এই ২০ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১০ জন, বিএনপির পাঁচজন এবং অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র থেকে বর্তমান ও সাবেক এমপি রয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের তিন এমপির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷

যদি মামলা করার উপযোগী তথ্যপ্রমাণ না পাই তাহলে মামলা করে কী লাভ: দুদক কমিশনার

তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে৷ তারা মূলত সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, খাস জমি দখল, ঘুষ গ্রহণ, কমিশন ও চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে৷

কমিশনের সদস্য মোজাম্মেল হক খান বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০ জনের বিরুদ্ধে আমাদের কাজ এখনো অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে৷ অনুসন্ধানে যদি আমরা পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ পাই আর তা মামলার উপযোগী হয়, তাহলে মামলা হবে৷ তার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না৷’’

দুই বছর ধরে সাবেক ও বর্তমান আরো সাতজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা বলছে দুদক৷ কিন্তু তাদের তদন্তের ফলাফল বা মামলা এখনো দেখা যায়নি৷ কাছাকাছি সময়ের মধ্যে শুধু সংসদ সদস্য পাপুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করলো বুধবার৷ তবে দুদকের মামলার আগেই পাপুল কুয়েতে গ্রেপ্তার হয়েছে৷ গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দুদকের অনুসন্ধানে ছিলেন না জনাব পাপুল৷

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যালনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেরুজ্জামান বলেন, ‘‘এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না কারণ হয়ত তদন্তে শেষ পর্যন্ত কিছু পাওয়া যায় না৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ সেটা বিশ্বাস করে না৷ তারা মনে করে এই তদন্ত লোক দেখানো৷ সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করার একটা উপায়৷ আর আমি মনে করি দুদক গভীর তদন্ত করে না নানা কারণে৷ আর গভীর তদন্ত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না৷’’

দুদক গভীর তদন্ত করে না নানা কারণে: ড. ইফতেখারুজ্জামান

দুদক তদন্ত শেষও করে না, তদন্ত ঝুলিয়ে রাখে৷ এইসব এমপিদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যাপ্ত কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া না গেলে তাও তো দুদকের প্রকাশ করা উচিত? ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘দুদক একটা সীমার মধ্যে কাজ করে৷ সেটার বাইরে যাওয়া হয়তো তাদের পক্ষে সম্ভব হয়না৷ তাই তারা তদন্ত শেষ করতে পারে না বা করে না৷’’

তবে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘‘আমরা যদি মামলা করার উপযোগী কোনো তথ্য প্রমাণ না পাই তাহলে মামলা করে কী লাভ হবে৷ যে মামলা আদালতে প্রমাণ করা যাবে না সেই মামলা আমরা কেন করব? আমরা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তে যা পাই তাই করি৷’’

তিনি বলেন, বিদেশে যারা টাকা পাচার করেছে তাদের টাকা ফেরত আনারও উদ্যোগ নিচ্ছে দুদক৷ বিশ্বের ১৩২টি দেশের সাথে বাংলাদেশের মিউচুয়াল লিগ্যাল আসিসটেন্স চুক্তি আছে৷ তার আওতায় তথ্যও পাওয়া যায়৷ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘পিকে হালদার আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ নয়, সে গুরুত্বপূর্ণ আসামি৷ সে দেশে ফিরুক আর না ফিরুক তার বিরুদ্ধে আমাদের কাজ চলছে৷’’