1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে ইউক্রেনের পারমাণবিক শক্তি চুল্লি

২ মার্চ ২০২২

ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান হামলা কি পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে? সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না৷ তবে তার আগেই বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে ইউক্রেনের ১৫টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার রিয়্যাক্টর৷ 

https://p.dw.com/p/47u3s
TABLEAU | 35 Jahre Nuklearkatastrophe von Tschernobyl | Helikopter 1986
ছবি: AFP/Getty Images

গত সপ্তাহে রাশিয়ার সেনাবাহিনী চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করার পরই আরেকটি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা ব্যক্ত করে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ প্রকৃতপক্ষে মেয়াদোত্তীর্ণ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ৷ যুদ্ধপরিস্থিতিতে ঝুঁকি আরো বেড়েছে৷

তবে দুশ্চিন্তা শুধু চেরনোবিলকে ঘিরে নয়৷  তার চেয়েও বড় আশঙ্কা ইউক্রেনের সক্রিয় ১৫টি পারমাণবিক চুল্লিকে ঘিরে৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুদ্ধের কারণে বন্ধ রাখা হলেও এগুলো ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে৷ এর পাশাপাশি দুই দেশের সেনাবাহিনীর গোলাগুলির মাঝে পড়ে আকস্মিকভাবে আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই৷

গ্রিন পিস ইস্ট এশিয়ার পরমাণু বিশেষজ্ঞ শন বার্নি এবং ইয়ান ভান্দে পুট্টে বুধবার পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন৷ লিখিত বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এমনিতেই খুব জটিল এবং স্পর্শকাতার বিষয়৷  এগুলোকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বিশেষ ধরনের সম্পদ এবং কর্মীবাহিনী৷''

ইউক্রেনের বিয়ার কারখানায় তৈরি হচ্ছে হাতবোমা

রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে ক্রমাগত৷ শন বার্নি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ ১৫টি পারমাণবিক শক্তি চুল্লি রয়েছে এমন একটি দেশ এখন পুরোদস্তুর এক যুদ্ধে জড়িয়েছে৷ পারমাণবিক শক্তির ইতিহাসেই এটা খুব ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি৷''

ইউক্রেন এমন পরিস্থিতির কথা ভেবে শক্তি চুল্লিগুলো বানায়নি বলে বিপর্যয়ের শঙ্কাটাও বেশি৷ যুদ্ধের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে তৈরি করলে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন বেশ কিছু চুল্লি মাটির নীচে তৈরি করেছে, ইউক্রেনও হয়ত তাই করতো৷

রাশিয়া হামলা না চালালেও ঘটতে পারে বিপর্যয়

এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা স্যাপোরিশিয়া প্ল্যান্ট নিয়ে৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় দুটো পারমাণবিক শক্তি চুল্লির একটি এটি৷ এর আশপাশেও যুদ্ধ চলছে এখন৷

গ্রিনপিস ফ্রান্সের রজার স্পাউৎস মনে করেন, ‘‘হঠাৎ কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের আশঙ্কটাই এখন সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক৷ তাছাড়া (আপাতত) ‘নিষ্ক্রিয়' শক্তি চুল্লিগুলো দ্রুত ঠান্ডা না হলেও ঘটতে পারে বিপর্যয়৷''

ইউক্রেনের বেশির ভাগ পারমাণবিক শক্তি চুল্লিই এখন যুদ্ধের কারণে বন্ধ থাকে৷ স্পাউৎস জানান, শক্তি চুল্লিগুলোতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা খুব জরুরি৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিপর্যয়ের ঝুঁকি এমনিতেই অনেক বেড়েছে৷

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্থা কনফ্লিক্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অবজারভেটরির পরিচালক ডগ অয়্যার মনে করেন, রাশিয়াস্যাপোরিশিয়া বা অন্য কোনো পারমাণবিক শক্তি চুল্লিতে সরাসরি হামলা চালাবে সে আশঙ্কা খুবই কম৷  তবে গোলাগুলির মাঝে আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে৷ এছাড়া রাশিয়া পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলোর দখল নিলেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে৷ এমন রিয়্যাক্টর পরিচালনার জন্য দরকার প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ কর্মীবাহিনী৷ রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে তেমন দক্ষ লোক না থাকলে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমার আঘাত ছাড়াও নেমে আসতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়৷

স্টুয়ার্ট ব্রাউন/ এসিবি