1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নজর কাড়ার হাতিয়ার ডিজিটাল আইন

৩০ এপ্রিল ২০২১

ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ফটোশপের মাধ্যমে ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করে ভিডিও হিসেবে পোস্ট করায় বৃহস্পতিবার সিলেটে একজনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3smvC
Frankreich Protest der Polizei in Paris
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/J. Gilles

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম আনহার আলী (৩০)৷ বিশ্বনাথের পূর্ব দশঘর গ্রামের বাসিন্দা আনহার আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন বিশ্বনাথের সদর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা মনোহর হোসেন৷

দৈনিক প্রথম আলোতে মামলার এজাহারের একটি অংশ প্রকাশ করা হয়েছে৷ এজাহারে বলা হয়, ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় আনহার আলী তার ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ফটোশপের মাধ্যমে ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করে ভিডিও হিসেবে পোস্ট করেন৷ সেই ভিডিও দেখে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়৷

এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শুধু চলতি মাসে করা কয়েকটি মামলার কথা শোনা যাক৷

  • জয়পুরহাটের কালাইতে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ২১ এপ্রিল মো. আমানুল্লাহ আমানকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়৷ মামলাটি করেন কালাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তাফিকুল ইসলাম৷ (ডেইলি স্টার)
  • প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি ও সরকারবিরোধী অপপ্রচার করার দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ২২ এপ্রিল গ্রেফতার হন মানিকগঞ্জের সিংগাইরের আওয়ামী লীগ নেতা অলি আহমেদ মোল্লা (৫০)৷ মামলাটি করেন সিংগাইর উপজেলা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক মো. টিপু সুলতান৷ (বাংলা ট্রিবিউন)
  • ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি, সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নেতিবাচক ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ায় ২৫ এপ্রিল সাতকানিয়ায় দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ মামলাটি করেন সাতকানিয়া পৌরসভা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ৷ (কালের কণ্ঠ)
  • প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটূক্তি করে ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেয়ার অভিযোগে ৬ এপ্রিল রাজশাহীতে ফিরোজ কবীরকে (২৪) পুলিশে সোপর্দ করা হয়৷ ফিরোজ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়িও উপহার পেয়েছে তার পরিবার৷ পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলে রেজভি আল হাসান মুঞ্জিল স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সহায়তায় ফিরোজকে পুলিশের হাতে তুলে দেন৷ (যুগান্তর)
  • প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার ছবি ব্যঙ্গ ও কটূ‌ক্তি করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বরিশালে ২৩ এপ্রিল মাহাবুব ‌হো‌সেন (১৯) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ৷ ব‌রিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম মাস্টার, মেম্বার মনোয়ার হোসেন জুয়েল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাহাবুবকে আটক ক‌রে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন৷ (বাংলানিউজ)
Deutsche Welle Süd-Ost-Asien Mohammad Zahidul Haque
জাহিদুল হক, ডয়চে ভেলে বাংলাছবি: DW

বিরোধী রাজনীতি না থাকায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের পক্ষে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মুন্সিয়ানা দেখিয়ে শীর্ষ নেতাদের সুনজরে আসার সুযোগ কমে গেছে৷ সে কারণে তারা এ ধরনের মামলা করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের নজরে আসতে ডিজিটাল আইনকে ব্যবহার করছেন - যা ডিজিটাল আইনের প্রত্যক্ষ অপব্যবহার৷

শুধু আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কর্মীরাই নন, ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষনেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে কেউ অভিযোগ তুললে তাদের বিরুদ্ধেও ডিজিটাল আইনে মামলা দেয়া হচ্ছে৷

বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ‘আর্টিকেল ১৯' সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৩৮টি মামলা হয়েছে৷ সংস্থার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ফারুক ফয়সাল বলেন, ‘‘এই আইনে হওয়া মামলাগুলোর বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের করা৷'' ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানে ব্যবহার করা উচিত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য