1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজআফ্রিকা

সার্কিট বোর্ড রিসাইক্লিংয়ের অভিনব উদ্যোগ

১২ অক্টোবর ২০২১

প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁচামালের চাহিদাও বাড়ছে৷ পরিবেশবান্ধব উপায়ে ধাতুর রিসাইক্লিং সম্ভব করতেও নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে৷ দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকেরা সহজ ও সস্তার প্রক্রিয়ায় সেই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/41Xy3
Sortierung von Elektroschrott
ছবি: Hauke-Christian Dittrich/dpa/picture alliance

দেখলে মাংস পেষার গ্রাইন্ডার যন্ত্র মনে হলেও একটি যন্ত্র আসলে সার্কিট বোর্ড পেষার কাজ করে৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় এক উদ্ভাবনী গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ সার্কিট বোর্ডের দামী অংশগুলি রিসাইক্লিং করার চেষ্টা চলছে৷

কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের তাকুন্দা কন্দ ও ইয়খেন পেটারসেন এ ক্ষেত্রে দিশা দেখিয়েছেন৷ তাকুন্দা বলেন, ‘‘আসলে আমরা সার্কিট বোর্ড ভেঙে, গুঁড়িয়ে ভেতরের স্তরের নাগাল পেতে চাইছি৷ বোর্ডে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে তামা লুকিয়ে রয়েছে৷''

তামা বা আরও দামী সোনার নাগাল পাওয়ার কাজ কঠিন ও ব্যয়বহুল৷ দক্ষিণ আফ্রিকার ইলেকট্রনিক বর্জ্য বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ বিভিন্ন কোম্পানি বিশাল চুল্লিতে সেগুলি গলিয়ে কাঁচামাল উদ্ধার করে৷ কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর ইয়খেন পেটারসেন বলেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেক মানুষ সার্কিট বোর্ড সংগ্রহ করে রিসাইক্লারের কাছে নিয়ে যায়৷ সে সেগুলি গুঁড়িয়ে ফেলে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়৷ আমরা বললাম, আমরা কেন এখানেই সেই প্রক্রিয়া চালিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি না?''

ছোট আকারে, কম খরচে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে এমন প্রক্রিয়ার সন্ধান ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ৷ তাঁরা তামা নিষ্কাশনের জন্য এক রাসায়নিক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন৷ পাতলা অ্যামোনিয়া দ্রবণ নীচে থেকে সার্কিট বোর্ড ডুবিয়ে দেয়৷ কয়েক দিনের মধ্যে সেই দ্রবণ তামা নিষ্কাশন করে৷ নীল রং দেখে তা বোঝা যায়৷ অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ বেশ কয়েকবার ব্যবহার করা যায় বলে এই প্রক্রিয়া আরও পরিবেশবান্ধব৷ ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে রেয়ার মেটাল উদ্ধারের উদ্যোগকে ‘আর্বান মাইনিং' বলা হয়৷

সার্কিট বোর্ড রিসাইক্লিং

আফ্রিকার অনেক দেশের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায়ও সামান্য পরিমাণ বর্জ্যের রিসাইক্লিং হয়৷ ফলে ৫০ শতাংশেরও বেশি বর্জ্য আবর্জনার স্তূপে জমা হয়৷ অথবা ইলেকট্রনিক বর্জ্য বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ বর্জ্য থেকে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করলে রিসাংইক্লিংয়ের হার বেড়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন৷ প্রোফেসর পেটারসেন বলেন, ‘‘শুধু ভালো হৃদয়ের কারণে বর্জ্য রিসাইক্লিং করা হয় না৷ যারা সেই কাজ করে, তাদেরও আয়ের প্রয়োজন রয়েছে৷ সামান্য মুনাফা হলে আরও ভালো হয়৷ ফলে নির্দিষ্ট কোনো উপাদানের মূল্য থাকলে বড় আকারে তা নিষ্কাশন করে লাভ হয়৷''

ই-ওয়েস্ট রিসাইক্লিং প্রকল্পের আইডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রো-মেটালার্জি বিভাগে উঠে এসেছিল৷ বর্তমানে সেই টিম এখনো গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে৷ তথ্য সংগ্রহ করে রাসায়নিক প্রক্রিয়া আরও কার্যকর করে শুধু তামা নয়, সোনার জন্যও সেটির গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা চলছে৷

কম জ্বালানি ও কাঠামো গড়ে তোলার কম ব্যয় ছাড়াও এই প্রক্রিয়ার আরেকটি সুবিধা রয়েছে৷ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টান্ডাজিলে মোয়ো বলেন, ‘‘আমার কাছে এই প্রকল্পের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিষয় হলো এই, যে আমরা আমাদের স্থানীয় ব্যবহারকারীদের জন্য প্রযুক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছি৷ অন্য অনেক দেশের তুলনায় আফ্রিকায় ইলেকট্রনিক বর্জ্যের পরিমাণ কম৷ তা সত্ত্বেও পরিবেশের বেশি ক্ষতি না করে সবুজ প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ধাতু নিষ্কাশন করার চেষ্টা চলছে৷''

কেপ টাউন শহরের শিল্প এলাকায় ইয়খেন পেটারসেন এক স্থানীয় রিসাইকেল কোম্পানি পরিদর্শন করেছেন৷ তারাও ই-ওয়েস্ট রপ্তানি করে৷

পেটারসেন নতুন কাঁচামাল সন্ধান করছেন৷ ফলাফলের মধ্যে তুলনার সুবিধার জন্য এখনো পর্যন্ত গবেষকরা হুবহু এক ধরনের বোর্ড ব্যবহার করেছেন৷ তবে ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের সার্কিট বোর্ডের ক্ষেত্রে সেই প্রযুক্তি কার্যকর হতে হবে৷ ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্প পাইলট পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে৷

ইউলিয়া ইয়াকি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য