1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিএএ নিয়ে মামলা শুরু সুপ্রিম কোর্টে

১৯ মার্চ ২০২৪

২৩৭টি মামলার একত্রে শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে বাম সংগঠন আছে, আছেন বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

https://p.dw.com/p/4dsxB
সিএএ নিয়ে কলকাতায় প্রতিবাদসভা
ভারতে সিএএ নিয়ে ২৩৭টি মামলার একত্রে শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টেছবি: Subrata Goswami/DW

সম্প্রতি ভারতে কার্যকর হয়েছে নাগরিকত্ব সংশধনী আইন বা সিএএ। যা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে অভিযোগ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে ২৩৭টি মামলা জমা পড়ছে। এই সবকটি মামলা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মঙ্গলবার শুনানি শুরু হয়েছে।

মামলাকারীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নাম বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএম-এর যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ, কেরালার একটি রাজনৈতিক সংগঠন, এমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে যে বেঞ্চ এই মামলা শুনবে, তাতে আছেন বিচারপতি জেবি পারড়িওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।

সিএএ: পশ্চিমবঙ্গের কোথাও বাজছে ঢাকঢোল, কোথাও হচ্ছে প্রতিবাদ

প্রত্যেক মামলাকারীই এই আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের বক্তব্য, এখানে ধর্মীয় নিরপেক্ষতার বিষয়টিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। মুসলিমদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।

বস্তুত, ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি সংসদে পাশ হয়েছিল। এতদিন পর তা কার্যকর করা হয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য এই আইনটি কার্যকর করা হয়েছে। গত প্রায় চার বছর তা ফেলে রাখা হয়েছিল।

২০১৯ সালে পার্লামেন্টে বিলটি পাস হওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টে এবিষয়ে একাধিক মামলা হয়েছিল। সাবেক কংগ্রেস নেতা এবং আইনজীবী কপিল সিবল সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, আইনটিকে বাতিল করা হোক। কিন্তু আদালত জানিয়েছিল, যেহেতু নোটিফিকেশন জারি হয়নি, অর্থাৎ, আইনটি কার্যকর করা হয়নি ফলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করতে পারবে না। এখন আইন কার্যকর হওয়ার পর আদালত তা নিয়ে শুনানিতে সম্মত হয়েছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিক এবং খ্রিস্টানরা ভারতে এসে নাগরিকত্ব চাইলে তাদের তা দেয়া হবে। কীভাবে সেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানো হবে, তা স্পষ্ট করা হয়েছে আইনে।

বস্তুত, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির নামও উল্লেখ করা হয়েছে আইনে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে।

প্রশ্ন উঠেছে, ধর্ম উল্লেখ করে এভাবে আদৌ কোনো আইন তৈরি করা যায় কি না। কারণ ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির উল্লেখ আছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের অবশ্য বক্তব্য, প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এসে যাতে ভারতে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন, সে জন্যই ওই উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ''সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার আইন নয়। এর প্রভাব দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর পড়বে না।''

সিএএ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ এবং বাম আন্দোলনের কর্মী সুমন সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, সিএএ কার্যকর হওয়ার পর দেশজুড়ে এনআরসি হবে। সেখানে সংখ্যালঘু মুসলিমরা আক্রান্ত হবেন। তাছাড়া ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় গোষ্ঠীর উল্লেখ করে কোনো আইন তৈরি করা সংবিধানবিরোধী।''

অ্যামেরিকার উদ্বেগ

মার্কিন সেনেটর এবং সেনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান বেন কার্ডিন বলেছেন, ''এই আইনের প্রভাব ভারত-মার্কিন সম্পর্কের উপর পড়তে পারে।'' তার বক্তব্য, ভারত এবং অ্যামেরিকার সম্পর্ক বেশ কিছু মূল্য়বোধের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমরা মনে করি, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না। সকলকে সমান অধিকার দিতে হবে। কিন্তু ভারতের এই আইন বৈষম্যমূলক। সেখানে নির্দিষ্ট কিছু ধর্মের উল্লেখ করা হয়েছে। যা যথেষ্ট চিন্তার এবং উদ্বেগের।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, রয়টার্স)