‘ধর্ষণের জন্য পোশাক দায়ী' অনন্ত জলিলের এই মন্তব্যে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেক পাঠক৷ নারীদের বিষয়ে কিছু পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করেন কেউ কেউ৷
‘‘আমি মনে করি ধর্ষণের জন্য শুধুমাত্র পোশাক যেমন দায়ী নয়, তেমনি আপত্তিকর পোশাকের দায় কোনোভাবে এড়িয়ে যেতে পারেনা৷ এর জন্য প্রথমত সমাজব্যবস্থা দায়ী৷ এর সমাধান তখনই সম্ভব হবে, যখন বেকারত্ব, মাদক দ্রব্যের ব্যবহার ও অশ্লীলতা ইত্যাদির রোধ করা সম্ভব হবে,'' অনন্ত জলিলের বহুল আলোচিত ভিডিও সম্পর্কে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় এই মন্তব্যটি করেছেন শতাব্দী চ্যাটার্জী৷ তার বক্তব্যের সঙ্গেও ভিন্নমত পোষণ করেছেন অনেকে৷
ধর্ষণের কারণ শুধু নারীদের পোশাক তা মানতে রাজি নন অনেক পাঠক৷ ‘‘তাই যদি হয় তাহলে নুসরাত কেন ধর্ষিত হলো, সে তো বোরকা পড়েই মাদ্রাসার যেতো?'' মুনিয়া মুন্নির৷
তবে পাঠক শামীম শাহেদ মনে করেন, কারো সাথে মতের অমিল হলে তাকে হেয় করার মানষিকতার পরিবর্তন দরকার৷ তিনি অনন্ত জলিলের কথাকে সমর্থন করেছেন ঠিকই, কিন্তু আবার এ কথাও লিখেছেন, ‘‘এটাও ঠিক যে ইসলাম ধর্মে প্রথমে পুরুষের দৃষ্টি নত করতে এবং পরে মেয়েদের পর্দা করতে বলা হয়েছে৷'' পাঠক নূর ইসলাম শামীম শাহেদের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির লালসা বন্ধ করতে হবে৷''
রেজাউল করিম মনে করেন, ধর্ষণ রোধ করতে ‘‘নারী ও পুরুষ উভয়েরই নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া উচিত, আর তার জন্য বাবা-মায়ের ভূমিকা জরুরি৷ মেয়ে মানুষকে যেমন সম্মান দেওয়া উচিত, তেমনি পুরুষ মানুষের সাথে বিনয়ী ও সম্মান দেখানো উচিত৷''
‘‘বাক স্বাধীনতা সবার আছে৷ অনন্ত জলিল তার নিজস্ব মতামত প্রদান করেছেন৷ তার ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে কেন?,'' প্রশ্ন পাঠক ফাহাদ আল সাদের৷ একই প্রশ্ন কামরুল হাসানেরও৷
তবে মনসুর মুন্সি মনে করেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ছেলেদের দোষ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘গ্রামের রাস্তায় মেয়েদের বখাটে ছেলেদের উৎপাত করতে দেখা যায় ৷ এমনকি মেয়েদের বোরকা ধরে টানাটানি করতেও দেখা যায়৷''
মাকসুদুর রহমান মনে করেন, ‘‘পাশ্চাত্যের ড্রেসের সঙ্গে বাঙালি ছেলেরা এখনো অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি ৷ তাই ছোট কিংবা হালকা পোশাকে মেয়েদের দেখলেই বাঙালি যুব সমাজের চোখ চলে যায়৷''
কারো সৌন্দর্য দেখে বিমোহিতো হওয়া আর যৌন উক্তেজনা এক জিনিস নয়৷ খোলামেলা পোশাক মানুষের যৌন উত্তেজনা আনে-এটা স্বভাবিক৷ তাই বলে ধর্ষণ কেন?'' প্রশ্ন নিউটন মজুমদারের৷
তবে মো. আলমাস খান লিখেছেন, ‘‘কিছু পুরুষ নামের জানোয়ার আছে, যাদের কাছে নারী হয়ে যায় দেহ, হোক সে বয়স্ক হোক সে শিশু৷''
মাহবুবুর রহমান ধর্ষণের কারণ হিসেবে বর্তমান সমাজব্যবস্থাকে দায়ী করেলিখেছেন, ‘‘বর্তমান সমাজব্যবস্থায় পুরুষের কুরুচিপূর্ণ দিকটা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী