লেখক পাইচিংমং মার্মাকে লক্ষ্য করে পাঠক চৌধুরী রায়হান লিখেছেন, ‘‘ভাই পাইচিংমং মারমা, আমি খাগড়াছড়ি অনেকদিন ঘুরে এসেছি৷ তারা যে স্বাধীনতা ভোগ করে সেটা কোনো অংশেই বাঙালিদের চেয়ে কম নয়৷ কোন যুত্তিতে আদিবাসী সম্মোধন করেন ওদেরকে? আদিবাসীর অর্থ কী? ওরা সবাই হচ্ছে বহিরাগত বারমিজ উপজাতি৷''
‘‘দেশের স্বাধীনতা, সার্ভবৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীকে আরও সজাগ থাকতে হবে৷ বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ সময়ের দাবি৷ সাথে পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তায় আরও আপসহীন হতে হবে৷'' এই মন্তব্য পাঠক হাসান উল বান্না জীবনের৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
জুম চাষে জড়িত যাঁরা
বান্দরবানে জুমঘেরা পাহাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি বসতি৷ তিন পার্বত্য জেলায় ৩৫ হাজারেরও বেশি জুমিয়া পরিবার এই জুম চাষের সঙ্গে জড়িত৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
ভিন্ন নাম
খাগড়াছড়ির মহালছড়ির এক পাহাড়ের গাছপালা পোড়ানো হচ্ছে জুম চাষের জন্য৷ চাষ পদ্ধতি এক হলেও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে জুম চাষ আলাদা নামে পরিচিত৷ জুম চাষকে চাকমা ভাষায় জুম, মারমা ভাষায় ইয়াঁ, ত্রিপুরা ভাষায় হুগ, ম্রো ভাষায় উঃঅ, খিয়াং ভাষায় লাই, বম ভাষায় লাও বলা হয়৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
যেসব ফসল জন্মায়
খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে পাহাড়ের গায়ে জুম চাষ করছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মানুষ৷ ভারী বৃষ্টির পর পাহাড়ের মাটি খুঁড়ে রোপণ করা হয় বিভিন্ন ফসল৷ জুমের ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নানাজাতের ধান, কুমড়া, অড়হড়, শিম, শশা, করলা, ঢেঁড়শ, তিল, ভুট্টা, আদা, যব, তুলা, হলুদ, পাহাড়ি আলু, কচু, ইত্যাদি৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
বন উজাড়
বান্দরবানে জুম চাষের ফলে গাছপালা শূন্য পাহাড়৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
ফসল কাটার সময়
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের পাহাড় থেকে জুমের ফসল তুলছেন চাকমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ৷ জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জুমের ফসল কাটার মৌসুম৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
ফসল ঘরে তোলা
রাঙ্গামাটির সাজেকে পাহাড় থেকে জুমের ফসল নিয়ে ফিরছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
কর্মব্যস্ততা
রাঙ্গামাটির সাজেকের কংলাক পাহাড়ে জুমের চাল ঝাড়ছেন এক ত্রিপুরা নারী৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
নতুন বনাঞ্চল
জুম চাষে পাহাড়ের বন উজাড় হলেও অনেক পাহাড়েই নতুন নতুন বনাঞ্চল গড়ে তুলেছে বাংলাদেশের বন বিভাগ৷ রাঙ্গামাটির মানিকছড়ির এই বনাঞ্চল এরকমই একটি উদাহরণ৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
বিকল্প কর্মসংস্থান
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে কাপড় বুনছেন ত্রিপুরা নারীরা৷ পাহাড়ে বসবাসরত সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীই কাপড় বুননসহ নানান শৈল্পিক কাজে অভিজ্ঞ৷ এসব জনগোষ্ঠীকে আরো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
হস্তশিল্প
বান্দরবানের শৈলপ্রপাত এলাকায় নিজেদের তৈরি কাপড় ও হস্তশিল্প সামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন স্থানীয় বম সম্প্রদায়ের নারীরা৷ পাহাড়ে তৈরি এসব পণ্যের দেশে ও বিদেশে বেশ সমাদর রয়েছে৷ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলে এইসব সম্প্রদায় তাদের কাজের বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হবেন৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
জলকেলি উৎসব
রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় পানি খেলায় ব্যস্ত মারমা তরুণীরা৷ এই পানি খেলা বা জলকেলি উৎসব মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব, যা পালন করা হয় নববর্ষে৷
-
পাহাড়ে জুম চাষ
বাঁশ নৃত্য
বান্দরবানের রুমা উপজেলার বেথেলপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী বাঁশ নৃত্য পরিবেশনে বম তরুণীরা৷
এদিকে পাঠক জুনায়েদ আলী জিশান বিষয়টি নিয়ে তাঁর বিস্তারিত মতামত জানিয়েছেন এভাবে, ‘‘সবকিছুরই ভালো আর খারাপ দিক রয়েছে৷ এখানে শুধু নেতিবাচক দিকটা তুলে ধরা হয়েছে৷ লেখক প্রথমদিকে যে বাজার অর্থনীতির খারাপ দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেনর শেষের দিকে এসে কৃষি গুদাম চেয়ে দ্বিমুখীতার পরিচয় দিয়েছেন৷ যে রাস্তায় সেনা রসদ গেছে, সেই রাস্তায় পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীদের চিকিৎসা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিও গেছে৷ তবে এমনটা নয় যে পর্যটনের কারণে খারাপ কিছু হয়নি৷ টাকার লোভে কেউ তার মা-বোনকে অন্যের বিছানায় পাঠালে রাষ্ট্রের দোষ কোথায়? দেশকে নিজের, রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে নিজের মনে করে ভুলত্রুটি গুলোকে শুধরানোর চেষ্টা করা যেতে পারে৷'' ‘‘প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস, বাংলায় যাকে ‘মধুমাস' বলা হয়, সেই সময়ে খাগড়াছড়ির রাস্তায় উপচে পড়া ফল পচতে থাকে কেবলমাত্র একটি হিমাগারের অভাবে৷ দরিদ্র জুমচাষী ফসলের দাম পায় না৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, কৃষিশিল্পের বিকাশ না করে, মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কেন পর্যটন শিল্পই বিকাশ করতে হবে? আর কোনো শিল্প কি গড়ে উঠতে পারে না সেখানে? কেন এলাকার শিল্প সম্ভাবনা যাচাই না করে হুট করে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় খাগড়াছড়িতে বিশেষ পর্যটন গড়তে গেল সরকার?'' সরকারের কাছে এই প্রশ্ন রেখেছেন পাঠক শাহীনূর আলম৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
-
আদিবাসীদের কথা
কায়াপো
ব্রাজিলের কায়াপো গোষ্ঠীর এই সদস্যকে দেখলে মনে হতে পারে তাঁরা বোধ হয় অনেক আধুনিক৷ কিন্তু না৷ আসলে তাঁদের অবস্থান বিশ্বের অন্যতম অরক্ষিত ও সুবিধাবঞ্চিতদের দলে৷
-
আদিবাসীদের কথা
ইনুইট
ছবিতে গ্রিনল্যান্ডের ইনুইট-দের একজনকে দেখা যাচ্ছে৷ মেক্সিকো ও মধ্য অ্যামেরিকার মায়া গোষ্ঠী থেকে শুরু করে আফ্রিকা কিংবা উপমহাদেশ, প্রায় সব জায়গায় আদিবাসীদের বাস৷ জানা গেছে, ৯০টি দেশে প্রায় পাঁচ হাজার আদিবাসী গোষ্ঠী রয়েছে৷
-
আদিবাসীদের কথা
ব্যারব্যার
মরক্কোর ব্যারব্যার বা বর্বর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এঁরা৷ উত্তর আফ্রিকার প্রায় নয়টি দেশে এই আদিবাসীদের বাস৷ তাঁদের অনেকেই ‘তামাঝিঘট’ ভাষায় কথা বলেন যেটা আফ্রো-এশিয়ান ভাষা পরিবারের অন্তর্গত এবং প্রাচীন মিশরীয় ও ইথিওপীয় ভাষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট৷ আরবি সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে বাঁচাতে ব্যারব্যারদের অনেক লড়তে হয়েছে৷
-
আদিবাসীদের কথা
ওয়াওরানি
ইকুয়েডরের অ্যামাজন রেনফরেস্ট এলাকায় ওয়াওরানিদের বসবাস৷ সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের একটা অংশ ‘ইয়াসুনি ন্যাশনাল পার্ক’-এ নির্মিত ঘরবাড়িতে বসবাস শুরু করেছে৷ তবে আরেকটা অংশ এখনও বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়৷ এর চেয়ে বানর আর পাখি শিকার করে জীবন কাটাতেই পছন্দ করছেন তাঁরা৷
-
আদিবাসীদের কথা
ডংগ্রিয়া কোধ
ভারতের ওড়িশার এই আদিবাসীরা সম্প্রতি ব্রিটিশ এক কোম্পানির প্রস্তাবিত খননকাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন রুখে দিয়েছে৷ এই খননকাজে নিজেদের পবিত্র পাহাড় কাটা পড়ার বাস্তবতা তাঁরা মেনে নেননি৷ তবে বিশ্বের অন্য সব আদিবাসীদের পক্ষে যে এভাবে উন্নয়নের নামে এমন সব প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে তা নয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বরং উল্টোটাই হয়েছে৷
-
আদিবাসীদের কথা
শিক্ষার অভাব
আদিবাসী নারী ও মেয়েরা অনেকসময় গুণগত শিক্ষা পায় না৷ তবে পেরুর কুসকো অঞ্চলের আদিবাসীদের শিক্ষা দিতে ‘প্ল্যান’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে৷ সংস্থাটি আদিবাসীদের শিক্ষা কার্যক্রমে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটানোর চেষ্টা করছে৷
লেখক: সোনিয়া ফালনিকার/জেডএইচ