‘‘বিষয়টি এত সহজ নয়, যতটা সহজভাবে বলা হচ্ছে যে চিন্তা-চেতনায় তারা নাস্তিক, আর উপরে উপরে আস্তিক৷ তাদের এই জরিপ নিরপেক্ষ নয়৷এর্দোয়ানকে পছন্দ করে না বলে সে মনে-প্রাণে নাস্তিকতার দিকে ঝুঁকবে– এসব ধারণা হাস্যকর৷'' এমনই লিখেছেন পাঠক সুলতান আহমেদ৷
‘‘আমি অনুরোধ করবো তুরস্কে ঠিক কিভাবে জোর করে ধর্ম চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, মোট জনসংখ্যার কত ভাগ লোকের উপর তা করা হয়েছে, ধর্ম পালন না করলে কী করা হচ্ছে, তা একটু জানাবেন প্রমাণসহ,'' ডয়চে ভেলের পাঠক রাশেদুল হাসান শোভনের অনুরোধ৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
চীনে শতকরা ৯০ ভাগই ‘নাস্তিক’
৬৫টি দেশে জরিপ চালিয়েছিল ‘গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল’৷ জরিপ থেকে বেরিয়ে আসা তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নাস্তিকেরও দেশ৷ সে দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষই প্রত্যক্ষ ভা পরোক্ষভাবে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন৷ চীনের শতকরা ৬১ ভাগ মানুষ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সরাসরি অস্বীকার করেন, বাকি ২৯ ভাগ নিজেদের ধর্মে বিশ্বাসী নন বলে দাবি করেছেন৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
সুইডেনে ৭৬ শতাংশ
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ সুইডেনে সরকারি হিসেব অনুযায়ী মাত্র শতকরা ৮ ভাগ মানুষ উপাসনালয়ে গিয়ে ধর্ম চর্চা করেন৷ তবে গ্যালাপ-এর জরিপ অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭৬ ভাগ সৃষ্টিকর্তা আছেন বলে মনে করেন না৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
চেক প্রজাতন্ত্রে সামান্য কম
‘নাস্তিক’ চেক প্রজাতন্ত্রেও খুব বেশি কম নয়৷ মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩০ ভাগ মানুষ নিজেদের সরাসরিই ‘নাস্তিক’ বলেন৷ তবে বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের ধর্মবিশ্বাস আছে কিনা, তা জানাতেই রাজি নন৷ মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করেন৷ গ্যালাপ-এর জরিপ জানাচ্ছে, সাবেক সমাজতান্ত্রিক দেশটিতে এক হিসেবে শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষই নাস্তিক, কেননা তাঁরা ধর্ম বা সৃষ্টিকর্তার গুরুত্ব স্বীকার করেন না৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
ব্রিটেনে ৬৬ শতাংশ
জরিপে অংশ নেয়া ব্রিটেনের শতকরা ৫৩ জন মানুষ বলেছেন যে, তাঁদের কোনো ধর্মবিশ্বাস নেই৷ আর ১৩ ভাগ সরাসরিই বলেছেন, ‘আমি নাস্তিক’৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
হংকং ও জাপানে শতকরা ৬২ ভাগ
বিশ্বের ৬৫টি দেশের ৬৪ হাজার মানুষের মাঝে এই জরিপ চালিয়েছে গ্যালাপ৷ হংকংয়ের মানুষদের সম্পর্কেও একটা ধারণা পাওয়া গেছে এই জরিপ থেকে৷ দেখা গেছে, হংকংয়ের শতকরা ৪৩ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে নাস্তিক৷ বাকি ৫৭ ভাগের মধ্যে ১৯ ভাগকেও আস্তিক অন্তত মনে হয়নি৷ জাপানে প্রত্যক্ষ নাস্তিক শতকরা ৩১ ভাগ হলেও সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের গুরুত্ব নিয়ে ভাবেন না এমন মানুষও আছে অনেক৷
-
সাতটি ‘নাস্তিক’ দেশের কথা
জার্মানিতে ৫৯ ভাগ
জার্মানির ৫৯ ভাগ মানুষকেই নাস্তিক হিসেবে দেখিয়েছে গ্যালাপ৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশ, যেমন স্পেন, অস্ট্রিয়া এবং ফ্রান্সের নাগরিকদেরও বড় একটা অংশই নাস্তিক৷ বিশ্বের যেসব দেশে অনেক ‘আস্তিক’, সেসব দেশ থেকে অনেক মানুষই এসব ‘নাস্তিক’ দেশে এসে উন্নত জীবনের সন্ধান পেয়েছেন, পাচ্ছেন৷ ইউরোপের বেশ কিছু দেশেই এখনো নাস্তিকরাই সংখ্যাগুরু৷ তবে সংখ্যালঘু আস্তিকদের ধর্ম চর্চায় তাতে কোনো সমস্যা হয় না৷
লেখক: আরজেডএন/এসিবি
‘‘তুরস্কে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই, এমনকি এর্দোয়ান কারো উপর শরিয়া আইনও চাপিয়ে দেননি৷ তাই তাঁর শাসনের কারণে নাস্তিকতা বাড়ছে– এই কুযুক্তি চরম হাস্যকর এবং নিতান্তই এর্দোয়ান-বিদ্বেষপ্রসূত, '' এই মন্তব্যটি করেছেন জাবিন জাহরায়ী ৷ পাঠক রবিউল ইসলামের মতও অনেকটা এরকমই৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ডয়চে ভেলের এই রিপোর্টের বক্তব্যের সাথে আমি একদমই একমত নই, কারণ, পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, তার ৯০ শতাংশ হয়েছে ধর্মযুদ্ধ৷ অর্থাৎ, নাস্তিক বলে কোনো লাভ নেই৷ দিন শেষে সবাই তার প্রভুর কাছে আশ্রয় চায়৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী